২০২০ শেষে শতকোটি মানুষ ফাইভজির আওতায় আসবে

২০২৬ সালে প্রতি ১০টি মোবাইল সাবস্ক্রিপশনের মধ্যে চারটি হবে ফাইভজি। মানুষের ফাইভজি সাবস্ক্রিপশনের প্রতি আগ্রহ ও সম্পৃক্ততা অন্য যেকোনো প্রজন্মের মোবাইল সংযোগ থেকে দ্রুততর হচ্ছে। আর চলতি বছর শতকোটির বেশি মানুষ বা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৫ শতাংশ ফাইভজি নেটওয়ার্ক কাভারেজের আওতায় আসবে। সম্প্রতি প্রকাশিত এরিকসন মোবিলিটি রিপোর্টের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৬ সালে বিশ্বের ৬০ শতাংশ জনগণ ফাইভজি কাভারেজের আওতাভুক্ত হবে এবং ফাইভজি সাবস্ক্রিপশন ৩৫০ কোটিতে পৌঁছবে। একই সময়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ওশেনিয়াতে এলটিইর পরে ফাইভজি দ্বিতীয় সর্বাধিক জনপ্রিয় নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। পাশাপাশি এ অঞ্চলে ফাইভজি সাবস্ক্রিপশন ৩৮ কোটি ছাড়িয়ে যাবে এবং মোট মোবাইল সাবস্ক্রিপশনের ৩২ শতাংশ হবে ফাইভজি।

এরিকসনের প্রতিবেদনে পূর্বাভাসকৃত সময়ের মধ্যে এ অঞ্চলে যৌগিক বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার (সিএজিআর) ৩৩ শতাংশ অনুসারে মোট মোবাইল ডাটা ট্রাফিক ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। আশা করা হচ্ছে, এটি আগামী ছয় বছরে ৩২ গিগাবাইটে পৌঁছবে। মোবাইল ডাটা ব্যবহার বৃদ্ধির পেছনে আছে বিভিন্ন ভৌগোলিক অঞ্চলের মোবাইল অপারেটরদের বিভিন্ন এবং বিপুল পরিমাণ ডাটা প্ল্যান সুবিধা প্রদান।

চলতি বছরের দ্বিতীয়ার্ধে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড এবং থাইল্যান্ডে লাইভ নেটওয়ার্কসহ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ওশেনিয়াতে বাণিজ্যিকভাবে বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে ফাইভজি চালু হতে দেখা গেছে। ২০২১ সালে তরঙ্গ নিলাম পরিকল্পনায় বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম এবং মালয়েশিয়ার মতো দেশগুলোতে পরের বছরে ফাইভজি নেটওয়ার্ক চালুর বিষয় বিবেচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এরিকসন বাংলাদেশের প্রধান আবদুস সালাম বলেন, ফাইভজি বিভিন্ন বাজারে চালু হচ্ছে এবং বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে ফোরজি (এলটিই) নেটওয়ার্ক বিস্তারে গতি এখনো অব্যাহত রয়েছে। চলতি বছর শেষে বিশ্বের ৮০ শতাংশেরও বেশি মানুষ ফোরজি কাভারেজের আওতাভুক্ত হবে এবং ২০২৬ সালে এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৯৫ শতাংশে পৌঁছবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্ধিত ধারণক্ষমতা এবং দ্রুতগতির ডাটা সরবরাহ করতে ফোরজি নেটওয়ার্কের উন্নয়ন হচ্ছে। বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে ফাইভজি প্রবর্তন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উদ্যোগকে আরো বেগবান করবে এবং যোগাযোগ সেবা প্রদানকারীদের ও বাংলাদেশের আইসিটি ইন্ডাস্ট্রির ব্যাপক উন্নতি সাধন করবে।

এরিকসন মোবিলিটি প্রতিবেদনে আলোকপাত করা হয়েছে ফাইভজির সাফল্য কেবল কাভারেজ এবং সাবস্ক্রিপশনের পরিমাণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। এর মূল্যায়ন নতুন ব্যবহারকারী এবং তাদের ব্যবহার দ্বারাও নির্ধারিত হবে, যার মধ্যে প্রথমটি এরই মধ্যে শুরু হয়েছে। ফাইভজি নেটওয়ার্কে ক্রিটিক্যাল আইওটি চালু করা হবে এবং সঙ্গে ক্লাউড গেমিং অ্যাপ্লিকেশন ক্যাটাগরিও চালু হবে। এরিকসন কনজিউমার ল্যাবের নতুন ফাইভজি কনজিউমার পোটেনশিয়াল প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ২০৩০ সালের মধ্যে ফাইভজি কনজিউমার মার্কেটের মূল্য ৩১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছতে পারে, যার মধ্যে যোগাযোগ সেবাদানকারীরা (সিএসপি) আয় করবে মোট ৩ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার। ডিজিটাল সেবায় নতুন সুযোগ বৃদ্ধির সঙ্গে এ আয়ের পরিমাণ আরো বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

প্রতিবেদনের পূর্বাভাস অনুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ওশেনিয়াতে ফাইভজি ব্রডব্যান্ড সার্ভিস মার্কেট ২০৩০ সালের মধ্যে ২২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে পৌঁছবে। ধারণা করা হচ্ছে, সামগ্রিক সেবা প্রদানকারীদের মধ্যে ফাইভজি ডিজিটাল সেবার রাজস্ব ২০৩০ সালের মধ্যে ৭৫০ কোটি ডলার হবে। ফাইভজি ডিজিটাল সেবার মধ্যে ভিডিও, মিউজিক, গেমিং, বর্ধিত/ভার্চুয়াল বাস্তবতা এবং ভোক্তা আইওটি সেবা অন্তর্ভুক্ত।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *