কানাডায় নির্বাসনে থাকা সৌদি আরবের সাবেক শীর্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা সাদ আল জাবেরি বর্তমান ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ এনেছেন। তিনি বলেছেন, তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি আরবের যে কনস্যুলেটে ভিন্ন মতাবলম্বী সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে হত্যা করা হয়েছে, এর কয়েকদিন আগে সেখানে নিয়ে যেতে টোপ ফেলা হয়েছিল তার পরিবারের দু’সদস্যকে। এ সময়ে সেখানে তলব করা হয়েছিল অভিযুক্ত ‘টাইগার’ স্কোয়াডের দু’সদস্যকে। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সংশোধন করে তিনি এ অভিযোগ এনেছেন। সংশোধিত এই অভিযোগ সাদ আল জাবরির পক্ষে দাখিল করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। তার অভিযোগ, কানাডায় তাকে হত্যার জন্য ২০১৮ সালে একটি হিট স্কোয়াডকে নির্দেশ দিয়েছেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। কিন্তু বিমানবন্দর নিরাপত্তা বিষয়ক কর্তৃপক্ষ সেই চেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন আল জাজিরা।
আরো অভিযোগ করা হয়, ২০১৮ সালের মে মাসে কানাডায় পর্যটন ভিসা পেয়ে যায় সৌদি আরবের ‘টাইগার স্কোয়াডের’ দুই সদস্য আহমেদ আবদুল্লাহ ফাহাদ আল বাওয়ারদি এবং বদর মুঈদ সাইফ আল কাহতানি। হিট অর্ডার বা হত্যার নির্দেশ কার্যকর করতে তারা ২০১৮ সালের অক্টোবরে উড়ে যান কানাডা। আল জাবরির আইনজীবীরা বলেছেন, আল জাবরি ছিলেন সাবেক ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফের শীর্ষ সহযোগী। ২০১৭ সালে প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে প্রিন্স নায়েফকে ক্ষমতাচ্যুত করে ব্যাপক দমনপীড়ন চালানো হয়। এর মধ্য দিয়ে সৌদি আরবের মূল শাসক হয়ে ওঠেন ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। নতুন অভিযোগে বলা হয়েছে, ইস্তাম্বুলে যে কনস্যুলেটে ২০১৮ সালের ২রা অক্টোবর সাংবাদিক জামাল খাসোগিকে টাইগার স্কোয়াড হত্যা করেছে, এই হত্যার মাত্র কয়েকদিন আগে ওই একই কনস্যুলেটে যেতে প্রলুব্ধ করা হয় আল জাবরির পরিবারের সদস্যদের। তারা হলেন আল জাবরির সন্তান সারাহ এবং ওমর। দু’জনেই সৌদি আরবে জিম্মি রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে আল জাবরিকে দেশে ফেরাতে।
এসব অভিযোগ ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি পদবীবলে দায়মুক্তি পান। ওদিকে সিআইএ এবং অন্য গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তদন্ত করে বলেছে, সাংবাদিক খাসোগিকে হত্যায় নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। তবে এমন অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন মোহাম্মদ বিন সালমান। এ মামলায় অভিযুক্ত ৫ জনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়া হয়েছিল সৌদি আরবে। কিন্তু সেপ্টেম্বরে তাদের মৃত্যুদণ্ডকে শিথিল করে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এ মামলায় অন্য তিনজনকে সাত থেকে দশ বছরের জেল দেয়া হয়েছে।