তিন দেশের কূটনীতিককে বহিষ্কার করছে রাশিয়া

বিরোধী দলীয় নেতা অ্যালেক্সি নাভালনির সমর্থনে বিক্ষোভ র‌্যালিতে যোগ দেয়ার জন্য সুইডেন, পোল্যান্ড এবং জার্মানির কূটনীতিকদের বহিষ্কার করছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় শুক্রবার এ ঘোষণা দিয়েছে। নাভালনির সঙ্গে যে আচরণ করা হচ্ছে তা ব্রাসেলস ও মস্কোর মধ্যে সম্পর্ক নিম্ন পর্যায়ে নিয়ে এসেছে- রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের শীর্ষ কূটনীতিক এ কথা বলার পরই এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে রাশিয়া। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ইন্ডিপেন্ডেন্ট। রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, সেন্ট পিটার্সবুর্গে নিয়োজিত সুইডেন ও পোল্যান্ডের কূটনীতিকরা এবং মস্কোতে নিয়োজিত জার্মানির কূটনীতিকরা মস্কোতে গত ২৩ শে জানুয়ারি ‘বেআইনি’ র‌্যালিতে অংশ নিয়েছেন। এসব কূটনীতিককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে তাদেরকে রাশিয়া ছেড়ে যেতে হবে।
উল্লেখ্য, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সবচেয়ে কট্টর সমালোচক অ্যালেক্সি নাভালনি।
গত বছর আগস্টে তার ওপর স্নায়ুগ্যাস প্রয়োগ করে হত্যা চেষ্টা করা হয়। এ জন্য তিনি পুতিনকে দায়ী করেন। জীবনমৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে জীবন ফিরে পান নাভালনি। জার্মানিতে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে কয়েকদিন আগে দেশে ফেরেন তিনি। কিন্তু বিমানবন্দরে অবতরণের সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হয়। এর প্রতিবাদে মস্কোর রাজপথ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। ভয়াবহ ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন সেই বিক্ষোভে। এরই মধ্যে কর্তৃপক্ষ এ ঘটনায় কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। এমন অবস্থায় শুক্রবার দিনের শুরুতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে সাক্ষাত করেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান কর্মকর্তা জোসেপ বোরেল। তিনি এর আগে জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক মারাত্মক এক উত্তেজনার মধ্যে রয়েছে। এ সম্পর্ককে আরো নিম্ন পর্যায়ে নিয়ে এসেছে নাভালনির ঘটনা’।
গত মঙ্গলবার মস্কোর একটি আদালত রায় দেয় যে, জার্মানিতে অবস্থান করে নাভালনি তার বিরুদ্ধে এর আগে দেয়া শাস্তির বিধান লঙ্ঘন করেছেন। ২০১৪ সালের অর্থ পাচার মামলায় শর্ত সাপেক্ষে তার শাস্তি স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেই শর্ত লঙ্ঘন করেছেন। এ অপরাধে তাকে দুই বছর আট মাসের জেল দেয় আদালত। এর ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এমন অবস্থায় ল্যাভরভের সঙ্গে সাক্ষাত শেষে জোসেপ বোরেল বলেন, নাভালনিকে জেলে পাঠানো নিয়ে উদ্বেগ তিনি তুলে ধরেছেন। এ ছাড়া তাকে সমর্থন করে যে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করেছিলেন, তার মধ্য থেকে যে কয়েক হাজার মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। এ ছাড়া তিনি নাভালনির মুক্তির জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সমর্থন চেয়ে যোগাযোগ করেছেন। একই সঙ্গে আগস্টে নাভালনির ওপর বিষ প্রয়োগের তদন্ত দাবি করেছেন।
জবাবে ল্যাভরভ ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন যে, তারা বিষ প্রয়োগের কোনো প্রমাণ দেয়ার দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। ক্রেমলিন বলেছে, নাভালনির শাস্তির বিষয়ে পশ্চিমাদের কোনো কথা শুনতে চায় না তারা। একই সঙ্গে তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে পুলিশি অ্যাকশনের বিরুদ্ধেও কোনো কথা শুনতে চায় না।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *