টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নামা ঢলের কারণে সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। গতকাল সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি বিপত্সীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। জেলার ছাতকে সুরমার পানি বিপত্সীমার ১৫০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বশীলরা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে বৃষ্টিপাত হয়েছে ১৫০ মিলিমিটার। উজানে বৃষ্টিপাত হওয়ায় পানি আরো বাড়তে পারে।
জানা গেছে, তিনদিন ধরে সুনামগঞ্জে ভারি বৃষ্টি হচ্ছে। একই সঙ্গে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি বেশি হওয়ায় সুনামগঞ্জে ১৪ দিনের মাথায় দ্বিতীয় দফা বন্যা হয়েছে। নিম্নাঞ্চলের অনেক ঘরবাড়িতে আবার পানি উঠেছে। শহরের নবীনগর, ষোলঘর, উকিলপাড়া, উত্তর আরপিন নগরসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় সুরমা নদীর পানি কূল উপচে প্রবেশ করেছে। জেলার শিল্পশহর ছাতকসহ এ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন, দোয়ারাবাজার, তাহিরপুর ও জামালগঞ্জের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বলেন, সকাল ৯টায় সুরমা নদীর সুনামগঞ্জ পয়েন্টে পানি বিপত্সীমার ৪২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জে ও ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি বেশি হয়েছে। চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৫২৩ মিলিমিটার। এ কারণে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি আরো বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
এদিকে দ্বিতীয় দফার বন্যায় জেলার লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ায় এসব মানুষের দুর্ভোগ বেড়েছে কয়েক গুণ। অনেক এলাকায় খাদ্য ও সুপেয় পানির সংকট দেখা দিয়েছে।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব কয়টি উপজেলায় বন্যা তথ্যকেন্দ্র খোলা হয়েছে। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, বন্যার্তদের মধ্যে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। লাগাতার দুদফা বন্যায় সুনামগঞ্জের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, এবারের বন্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এজন্য ১১ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাদের যত বেশি সম্ভব বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র খোলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য. গত ২৮ ও ২৯ জুন ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে জেলা দোয়ারা, ছাতক, সুনামগঞ্জ সদর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ ও তাহিরপুর বন্যাকবলিত হয়। ওই বন্যার পানি নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি থেকে নামতে না নামতেই আবারো এসব উপজেলায় লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।