সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ২৯ শতাংশ কম রাজস্ব আহরণ

দেশে রাজস্ব আহরণে এককভাবে শীর্ষে অবস্থান করছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। ফলে সংস্থাটির রাজস্ব আয়ে ভাটা পড়লে স্বাভাবিকভাবেই তা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যে স্থবিরতা ও আমদানি-রফতানিতে যে ধস নেমেছে, তার প্রভাব পড়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ে। কভিড-১৯-এর প্রভাবে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে উচ্চ শুল্কের বাণিজ্যিক পণ্য আমদানি কমে যাওয়া অর্থাৎ রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রার প্রবৃদ্ধি যে হারে ধরা হয়েছে, সে অনুযায়ী আমদানি না হওয়াই মূলত ধসের কারণ বলে মনে করছে শুল্ক কর্তৃপক্ষ।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের তথ্যমতে, দেশের আমদানি-রফতানি খাতের রাজস্ব আয়ের সিংহভাগ লক্ষ্যমাত্রাই চট্টগ্রাম কাস্টমস থেকে ধরা হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সদ্য শেষ হওয়া ২০১৯-২০ অর্থবছরে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ থেকে সংশোধিত রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরেছিল ৫৮ হাজার ২৯৮ কোটি টাকা। এর বিপরীতে আহরণ হয়েছে ৪১ হাজার ৭৬৭ কোটি টাকা। লক্ষ্য অনুযায়ী রাজস্ব কম আহরণ হয়েছে ১৬ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা, অর্থাৎ সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ২৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ কম। আবার এর আগের অর্থবছরের চেয়েও সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে ৪ দশমিক ১৫ শতাংশ কম রাজস্ব আহরণ হয়েছে।

গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৪৩ হাজার ৫৭৭ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণ করেছিল চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। কাস্টমসের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে সিডি, আরডি, এসডি, ভ্যাট ও জরিমানা খাতের টাকা কাস্টম হাউজের হিসাবে দেখানো হয়। এর বাইরে এআইটি ও এটি (অ্যাডভান্স ট্যাক্স) খাতেও রাজস্ব আহরণ করা হয়। তবে তা আয়কর ও ভ্যাট বিভাগে জমা দেয়া হয়।

চট্টগ্রাম কাস্টমসের কমিশনার মোহাম্মদ ফখরুল আলম এ প্রসঙ্গে বণিক বার্তাকে বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ার পর মূলত ফেব্রুয়ারি থেকে দেশের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে প্রভাব পড়তে শুরু করে। বিপুল ভোগ্যপণ্য আমদানি হলেও সেই পণ্যে শুল্কহার একেবারে নেই বললেই চলে। শেষের দিকে ব্যবধান কিছুটা কমিয়ে আনলেও লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। কারখানা খোলার পর যেসব পণ্য ছাড় হয়েছে, তারও শুল্ক খুবই কম।

চট্টগ্রাম চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলম বণিক বার্তাকে বলেন, দেশের অর্থনীতি একটি পর্যায়ে যখন পৌঁছেছে, এমন সময়ে আঘাতটি হানল এই করোনাভাইরাস। লকডাউনের কারণে স্বাভাবিকভাবেই ব্যবসা-বাণিজ্য একেবারে স্থবির হয়ে পড়েছে। এ স্থবিরতাই আমদানি-রফতানি কার্যক্রমকে কার্যত থমকে দিয়েছে,

যার সরাসরি প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে সময়োপযোগী পরিকল্পনা ও সম্মিলিত প্রচেষ্টায় কাজ করে যেতে হবে ।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *