লকডাউনে বিশ্বব্যাপী আটকে পড়েছে ৩০ লাখ অভিবাসী: জাতিসংঘ

নভেল করোনাভাইরাস মহামারী নিয়ন্ত্রণে বেশির ভাগ দেশে কড়াকড়ি ও বিধিনিষেধে আটকা পড়েছে প্রায় ৩০ লাখ অভিবাসী। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় জাতিসংঘ। খবর এএফপি।

জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) জানায়, নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও মানুষকে নিরাপদে নিজ নিজ দেশে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া উচিত। সীমান্ত বন্ধ এবং ভ্রমণে কঠোর বিধিনিষেধের কারণে অধিকসংখ্যক অভিবাসী বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়ে রয়েছে।

আটকে পড়া অভিবাসী বলতে দেশে ফিরতে ইচ্ছুক অভিবাসীদেরই বোঝানো হচ্ছে, যাদের নিজ দেশে বসবাসস্থল রয়েছে। কিন্তু মহামারীর কঠোর বিধিনিষেধে দেশে ফিরতে পারছে না।

আইওএম প্রধান আন্তোনিও ভিতোরিনো বলেন, বিভিন্ন প্রান্তে উভয় সংকটে থাকা ২৭ লাখ ৫০ হাজার অভিবাসীকে উদ্ধারে আরো বেশি কিছু করা দরকার দেশগুলোকে। কভিড-১৯-এর বিধিনিষেধ সত্ত্বেও অভিবাসীরা নিরাপদে ও সম্মানজনকভাবে দেশে ফিরতে পারে।

গত ১৩ জুলাই পর্যন্ত অফিশিয়াল উপাত্তের ভিত্তিতে আইওএম জানায়, আটকে থাকা ওই ২৭ লাখ ৫০ হাজার অভিবাসীর জরুরি সহায়তা দরকার। যার মধ্যে রয়েছে খাদ্য, পানি, আশ্রয় ও নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের সুযোগ।

আটকে পড়া অভিবাসীদের মধ্যে রয়েছেন মৌসুমভিত্তিক কর্মী, অস্থায়ী বাসিন্দা, আন্তর্জাতিক ছাত্র ও চিকিৎসা এবং সমুদ্র ভ্রমণের জন্য যাওয়া মানুষ।

মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি আটকে পড়া অভিবাসী রয়েছে। সেখানে প্রায় ১২ লাখ ৬০ হাজার অভিবাসী আটকা পড়ে আছে। তার পরই রয়েছে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে, যেখানে ৯ লাখ ৭৭ হাজার অভিবাসী আটকে রয়েছে।

ইউরোপীয় অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইইএ) ও সুইজারল্যান্ডে ২ লাখ ৩ হাজার এবং উত্তর, মধ্য আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলে ১ লাখ ১১ হাজার অভিবাসী আটকা পড়ে আছে বলে জানায় আইওএম।

১০১টি দেশের ৩৮২টি অবস্থানে আটকা পড়া অভিবাসীদের নিয়ে আইওএম জানায়, আগে যতটা বলা হয়েছিল, বর্তমানে কভিড-১৯ মহামারীতে যে তার চেয়ে অধিকসংখ্যক অভিবাসী আটকা পড়ে আছে তা এ উপাত্তগুলোর মাধ্যমে উঠে এসেছে।

নিজ দেশে নিরাপদে ও স্বেচ্ছায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে আইওএমের কাছে অনুরোধ করেছে ১ লাখ ১৫ হাজার অভিবাসী। এ পর্যন্ত ১৫ হাজারের মতো অভিবাসীকে নিরাপদে ফেরত পাঠাতে পেরেছে জাতিসংঘভিত্তিক সংস্থাটি।

আইওএম সতর্ক করে জানায়, আটকে পড়ার পর অভিবাসীরা নিপীড়ন, শোষণ ও অবহেলার শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে থাকেন। জীবিকা ও কর্মসংস্থানের অভাবের কারণে তারা বিভিন্ন অপরাধ চক্র, মানব পাচারকারীদের খপ্পরে পড়তে পারেন। এছাড়া জাতীয় করোনাভাইরাস পলিসি থেকেও যে ওই আটকা পড়া অভিবাসীরা বাদ পড়েন, সেদিকেও ইঙ্গিত করে আইওএম। প্রায় চার লাখ নাবিক যে বিভিন্ন প্রান্তে আটকা পড়া অবস্থায় রয়েছে এবং তাদের কেউ কেউ ১৭ মাস ধরে রয়েছে সে বিষয়টিও উল্লেখ করে তারা।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *