রাঙ্গামাটির সীমান্তবর্তী এলাকায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট

গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহে পানির উৎস শুকিয়ে যাওয়া ও বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি ঢলের কারণে কুয়ার পানি অপরিষ্কার হয়ে পড়ায় সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি উপজেলার দুর্গম দুমদম্যা ইউনিয়নে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এ ইউনিয়নের প্রায় ১২ হাজার মানুষ। সুপেয় পানির তীব্র সংকটে ভুগছে তারা। প্রতি বছরই গ্রীষ্মের শেষ ও বর্ষায় পানীয়জলের সংকট দেখা দেয় সীমান্তবর্তী এ ইউনিয়নে। দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়রা এ দুর্ভোগ পোহাতে থাকলেও এখন পর্যন্ত কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

সূত্রে জানা গেছে, উঁচু-নিচু পাহাড় আর কাপ্তাই হ্রদবেষ্টিত সড়কপথবিহীন উপজেলা রাঙ্গামাটির জুরাছড়ি। উপজেলার চারটি ইউনিয়নের মধ্যে সীমান্তবর্তী ও দুর্গম ইউনিয়ন দুমদম্যা। ইউনিয়নটিতে উপজেলা সদর থেকে দুর্গম পাহাড়ি পথ বেয়ে যেতে সময় লাগে প্রায় তিন থেকে চারদিন। কিংবা বরকল উপজেলা দিয়ে নৌপথে সীমান্তবর্তী ঠেগামুখ হয়ে যাওয়া যায় এর চেয়ে কিছুটা কম সময়ে। উপজেলার এ ইউনিয়নে বসবাস করে প্রায় ১২ হাজার মানুষ। নভেল করোনাভাইরাস পরিস্থিতিতে এ এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দেয়ায় সড়কপথ না থাকায় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে ত্রাণ সহায়তা দেয়া হয়েছিল।

ইউনিয়নের বাসিন্দা বিমল চাকমা ও সুরেশ চাকমা বলেন, সরকারি লোকজনকে বিভিন্ন সময়ে এখানে কয়েকটা নলকূপ বসানোর কথা বলা হলেও কেউ এখনো একটিও নলকূপ বসানোর ব্যবস্থাও করতে পারেননি। আমরা ঝিরি ঝরনা ও কুয়ার পানি সারা বছর পান করতে পারি না। বিশেষ করে বর্ষার শুরুতে কুয়ার পানি দূষিত হয়ে যায়। আবার গ্রীষ্মকালে ঝিরি ঝরনার পানি শুকিয়ে যায়। দীর্ঘ বছর ধরে আমরা এমন কষ্ট ভোগ করছি। কিন্তু যেন আমাদের নিয়ে ভাবার কেউ নেই।

জুরাছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহফুজুর রহমান জানান, দুমদম্যা ইউনিয়নটি যেমন দুর্গম, তেমনি বড়। উপজেলাটির বাকি তিন ইউনিয়নের সমান এ ইউনিয়নটি। দুর্গমতার কারণে সেখানে তেমন একটা গভীর নলকূপ স্থাপনও সম্ভব হয়ে ওঠেনি। যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভুগছে এলাকাবাসী। ইউনিয়নটির বগাখালীতে একটি নলকূপের ব্যবস্থা এডিবির অর্থায়নে উপজেলা পরিষদ থেকে আমরা করেছি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী অনুপম দে বণিক বার্তাকে বলেন, বেশ কয়েক বছর আগে মনে হয় সেখানে কয়েকটা রিংওয়েল করা হয়েছিল। দুর্গম এলাকা হওয়ায় উপকরণগুলো নেয়া কষ্টসাধ্য। স্বাভাবিক নলকূপের বরাদ্দে সেখানে নলকূপ বসানো সম্ভব না। যদি পার্বত্য জেলা পরিষদের মাধ্যমে সেখানকার স্থানীয়রা আবেদন করেন, তাহলে আমরা সেখানে বিশেষ বরাদ্দ দিয়ে রিংওয়েল করে দেয়ার ব্যবস্থা নেব।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *