ভারত থেকে প্রথম কনটেইনার ট্রেন এল বেনাপোলে

দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল দিয়ে স্থলপথের পাশাপাশি এই প্রথম রেলপথে ভারত থেকে ২৫টি ফ্ল্যাট ওয়াগনের মাধ্যমে ৫০ কনটেইনারে আটজন আমদানিকারকের ৬৪০ টন গার্মেন্ট, কসমেটিকসহ বিভিন্ন পণ্য আমদানি হয়েছে। গতকাল এসব পণ্য আমদানি করা হয়। কনটেইনার পণ্য আমদানিকে ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যের নতুন একটি সহজতম পদ্ধতি বলে মত প্রকাশ করেছেন। তাদের মতে, এতে বাণিজ্য যেমন সহজ হবে, তেমনি সরকারেরও বিপুল পরিমাণে রাজস্ব আসবে।

গতকাল কনটেইনার রেলটি ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। এ সময় কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান ফিতা কেটে সাইড ডোর কনটেইনারে আমদানি বাণিজ্যের সূচনা করেন।

জানা যায়, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে ভারত সরকারের নিষেধাজ্ঞায় গত ২২ মার্চ থেকে বেনাপোল বন্দরের রেল ও স্থলপথে ভারতের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য বন্ধ হয়ে যায়। হঠাৎ এমন সিদ্ধান্তে বেনাপোল বন্দরে প্রবেশের অপেক্ষায় ভারতের পেট্রাপোল বন্দরে প্রায় পাঁচ হাজার ট্রাক পণ্য নিয়ে আটকা পড়ে থাকে। বেনাপোল বন্দরেও ভারতে প্রবেশের অপেক্ষায় আটকা পড়ে রফতানি পণ্যবাহী ট্রাক। টানা আড়াই মাস ধরে আমদানি বন্ধ থাকায় ব্যবসায়ীরা লোকসানের কবলে পড়েন। ভারতে লকডাউন শিথিল হলে দেশের অন্যান্য বন্দর দিয়ে আমদানি-রফতানি শুরু হলেও ভারতীয়দের বাধার কারণে কোনোভাবে এ পথে বাণিজ্য শুরু হচ্ছিল না। অবশেষে দুই দেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আন্তরিকতায় বিকল্প মাধ্যম হিসেবে সাইড ডোর কনটেইনার পণ্য আমদানি আলোচনা হয়, যার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল ভারত থেকে কনটেইনারে করে এসব পণ্য আমদানি করা হলো।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, করোনা প্রাদুর্ভারের কারণে ট্রাকে ভারত থেকে চাহিদা মতো পণ্য আমদানি করা সম্ভব হচ্ছিল না। এখন কনটেইনার ট্রেনে পণ্য আমদানিতে ব্যবসায়ীরা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনি সরকারেরও বিপুল পরিমাণে রাজস্ব আসবে।

বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার আজিজুর রহমান বলেন, করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সব নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে এখন থেকে নিয়মিত কনটেইনার রেলের মাধ্যমে রেলপথে পণ্য আমদানি হবে। পরে কাস্টমসের কার্যক্রম ও সরকারের রাজস্ব পরিশোধ শেষে ব্যবসায়ীরা বন্দর থেকে পণ্য খালাস নিতে পারবেন। এমন প্রক্রিয়ায় ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন দিক উন্মোচন হলো। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদেরও যথেষ্ট সাড়া পাওয়া যাচ্ছে।

বেনাপোল রেলওয়ের স্টেশনমাস্টার সাইদুর রহমান জানান, এই প্রথম সাইড ডোর রেল কনটেইনারের মাধ্যমে পণ্য আমদানি হলো। এতে ব্যবসায়ীদের এ পথে বাণিজ্যে আগ্রহ বাড়বে। এছাড়া এ পণ্য আমদানির মাধ্যমে বাংলাদেশে রেলওয়ের ৫ লাখ ৬০ হাজার টাকা রাজস্ব আহরণ হয়েছে। এভাবে যদি ব্যবসায়ীরা রেলপথে আমদানি অব্যাহত রাখেন, তাহলে সামনের দিনে রেলের রাজস্ব আরো বাড়বে।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, ব্যবসায়ীরা এখন থেকে ইচ্ছে করলে সব ধরনের পণ্য কনটেইনার রেলের মাধ্যমে বেনাপোল বন্দর দিয়ে আমদানি করতে পারবেন। আগামীতে রেলে পণ্য আমদানির সব ধরনের সুবিধা বাস্তবায়ন হবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *