বেহাল দশা শিক্ষা খাতে,[২]সিদ্ধান্ত নেই প্রাথমিকে ধোঁয়াশায় মাধ্যমিক

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে ১৭ মার্চ থেকে। সরাসরি পাঠদান বন্ধ থাকায় এ বছরের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা, জেএসসি-জেডিসির পাশাপাশি বাতিল করা হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষাও। আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষাও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এখন সেশনজট চরমে।

প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষার বিদ্যাপীঠ বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত শিক্ষায় বেহাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে করোনাভাইরাসের কারণে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার সব পর্যায়েই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছাত্রছাত্রীরা। বাতিল করা হয়েছে এ বছরের প্রাথমিক সমাপনী, জেএসসি- জেডিসি ও এইচএসসি পরীক্ষা। প্রথম শ্রেণি থেকে শুরু করে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করা হলেও প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা কিসের ভিত্তিতে ওপরের শ্রেণিতে প্রমোশন পাবে, সে বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি সরকারের পক্ষ থেকে। অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের কথা বলা হলেও সেটি নিয়েও রয়েছে ধোঁয়াশা। করোনার কারণে আগামী বছরের এসএসসি পরীক্ষা যথাসময়ে অনুষ্ঠিত হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। তথ্যমতে, চলতি শিক্ষাবর্ষ শেষ হতে মাত্র ৪০ দিন বাকি। এখন পর্যন্ত প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত না আসায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। অনেক বিদ্যালয় নিজেরা বাসায় সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন পাঠিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের জন্য প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দ্রুত সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া উচিত, যেন বিদ্যালয়গুলো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারে।

রাজধানীর মগবাজার মধুবাগে শের ই বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. আবদুস সাত্তার প্রতিবেদককে জানান, প্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষক নন এমপিওভুক্ত। ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে করোনার কারণে টিউশন ফি আদায় করা সম্ভব হয়নি। অনেক অভিভাবক অ্যাসাইনমেন্ট সম্পর্কে জানে না। তাই তাদের ফটোকপি করে সরবরাহ করতে হয়। এ নিয়ে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সংকটে পড়েছে। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারির শুরুতে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হলেও আগামী বছরের এ পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপও হয়নি। নেওয়া হয়নি টেস্ট পরীক্ষাও।
মুজিববর্ষেকে সামনে রেখে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশন ≣ [১] রাতে পর্দা উঠছে সিপিএলের ≣ [১] পূর্ব রামপুরায় ছাদ থেকে পড়ে পুলিশ কনস্টবল গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি

ফেব্রুয়ারিতে এ পরীক্ষা হচ্ছে না বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষাবোর্ডের নির্ভরযোগ্য একটি সূত্র জানিয়েছে। এর আগে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে পরে সুবিধাজনক সময়ে এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রতিবছর সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হলেও এবার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় কবে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে সে ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাগিদ দিলেও বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে জানিয়েছে তারা এ প্রক্রিয়ায় যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা প্রথমে ‘প্রক্টরড রিমোট এক্সামিনেশন সিস্টেম’ সফটওয়্যার ব্যবহার করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার কথা বললেও পরে সম্প্রতি এক বৈঠকে জানায়, এই সফটওয়্যার দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার মতো সক্ষমতা দেশে এখনো তৈরি হয়নি। এই সফটওয়্যার দিয়ে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে। তাই বাতিল করা হয় এ প্রক্রিয়া। এখন পর্যন্ত ভর্তি পরীক্ষার ব্যাপারে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে গত ১৭ মার্চ থেকে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। তবে করোনার প্রকোপ কিছুটা কমার পর গত আগস্ট মাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কওমি মাদরাসা খোলার অনুমতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। করোনা মহামারীর মধ্যেই ইংলিশ মিডিয়ামের ‘ও’ লেভেল এবং ‘এ’ লেভেলের পরীক্ষা গত অক্টোবরে শুরু হয়ে কোনো কোনো পরীক্ষা চলছে এখনো। করোনার মধ্যে পরীক্ষা নেওয়া নিয়ে এর আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আলাপে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, এই পরীক্ষার্থীদের সংখ্যা কম হওয়া স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষা নিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *