বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও প্লাজমা থেরাপি নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তদের চিকিৎসায় বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে। এরই মধ্যে বেশকিছু নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্লাজমা থেরাপি দেয়া হয়েছে। চিকিৎসা পদ্ধতিটি কার্যকর হওয়ায় করোনার রোগী সুস্থ হওয়ার পর তার প্লাজমা সংগ্রহ এবং তা বিতরণে ‘সহযোদ্ধা’ নামের একটি প্লাজমা নেটওয়ার্ক চালু করা হয়েছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক গত মঙ্গলবার এক অনলাইন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এ নেটওয়ার্কের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, এটুআই ইনোভেশন ল্যাব এবং সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ই-জেনারেশনের সহযোগিতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এ প্লাজমাদাতা নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।
প্লাজমা নেটওয়ার্কের অনলাইন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এটুআইয়ের প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. আবদুল মান্নান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এটুআই ইনোভেশন ল্যাবের প্রযুক্তি প্রধান ফারুক আহমেদ। ই-জেনারেশনের গ্রুপ চেয়ারম্যান শামীম আহসান প্লাটফর্মের প্রেক্ষাপট ও পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন। এ সময় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক আমিনুল হাসান।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ‘সহযোদ্ধা’ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে করোনা রোগীর চিকিৎসায় প্লাজমাদাতা এবং গ্রহীতার মধ্যে একটি সংযোগ তৈরি করবে। করোনায় আক্রান্ত রোগীর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শের ভিত্তিতে এ ডিজিটাল প্লাজমা নেটওয়ার্ক থেকে প্রয়োজনীয় প্লাজমা সংগ্রহ করতে পারবেন। সহযোদ্ধার (www.shohojoddha.com)
ওয়েবসাইটে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হওয়া যে কোনো ব্যক্তি প্লাজমা প্রদানের আগ্রহ জানাতে পারবেন।
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাস সৃষ্ট স্বাস্থ্য সংকটে বাংলাদেশ সরকার জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারের উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় সহযোদ্ধা নেটওয়ার্কটি চালু করা হয়েছে, যা নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সহযোগিতা করবে।
নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্তদের প্লাজমা থেরাপি দেয়া নিয়ে বাংলাদেশে ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। কভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে যারা পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন, তাদের শরীরে এক ধরনের অ্যান্টিবডি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। এমন ব্যক্তির রক্ত থেকে সংগ্রহ করা হয় প্লাজমা। পরবর্তী সময়ে নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে সেই অ্যান্টিবডি প্রয়োগ করা হলে তার শরীরেও সেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয় এবং কেউ কেউ সুস্থ হয়ে উঠছেন। পরীক্ষামূলক প্রয়োগে এমনটা দেখা গেছে।
চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, এ অ্যান্টিবডি আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে নভেল করোনাভাইরাসকে মোকাবেলা করে। আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে ভাইরাসকে অকেজো করতে সাহায্য করে। অবশ্য সব রোগীর শরীরে কাজ করার ব্যাপারে সন্দেহাতীত প্রমাণ না থাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটাকে শুধু পরীক্ষামূলক পর্যায়ে রাখার পরামর্শ দিচ্ছে।