১৯৩০ ও ৪০-এর দশকে এমজিএম স্টুডিও বছরে ৫০টি নতুন ছবি মুক্তি দিত এবং সেগুলোতে তত্কালের বিশ্বসেরা তারকারা অভিনয় করতেন। এমজিএমের সহপ্রতিষ্ঠাতা লুইস বি. মেয়ারের একটি কথা বিখ্যাত হয়ে আছে। তিনি বলেছিলেন, আকাশের চেয়ে তাদের কাছে বেশি তারকা আছে। এরপর টেলিভিশনের আধিপত্যে স্টুডিওগুলোর দাপট কমতে থাকে। এরপর আর কোনো কোম্পানি সে রকম প্রভাব তৈরি করতে পারেনি। তবে এবার যেন ইতিহাস আবার সেই ক্ষণ ফিরিয়ে আনছে। আর সেটা হতে যাচ্ছে স্ট্রিমিং কোম্পানি নেটফ্লিক্সের হাত ধরে।
এ বছর প্রতি সপ্তাহে নতুন ছবি মুক্তি দেবে নেটফ্লিক্স। গত অক্টোবরেই এমন ইঙ্গিত দিয়েছিল এ স্ট্রিমিং জায়ান্ট। ২০২১ সালে প্রতি সপ্তাহেই নিজেদের প্রায় ২০ কোটি সাবস্ক্রাইবারকে নতুন কন্টেন্ট দিতে যাচ্ছে তারা। এমন কাজ এমজিএম তাদের তুমুল সাফল্যের দিনেও করতে পারেনি।
২০২১-এর ছবিগুলো বেশির ভাগই নেটফ্লিক্স অরিজিনাল বা নতুন ছবি। কিছু আছে তাদের কিনে নেয়া পুরনো ছবি। সব মিলিয়ে এ বছর তাদের পাইপলাইনে আছে ৭০টি চলচ্চিত্র। মিউজিক্যাল থেকে অ্যাকশন, রোমান্টিক কমেডি থেকে ফ্যামিলি অ্যানিমেশন। তাদের কাছাকাছি থাকা ডিজনির চেয়ে তারা অর্ধশত বেশি ছবি মুক্তি দেবে।
ডোয়াইন জনসন, মেলিসা ম্যাককার্থি, হ্যালি বেরি, জেসন মোমোয়া, অ্যামি অ্যাডামস, রায়ান রেনল্ডস, ক্রিস হেমসওয়ার্থ—আরো অনেক তারকা থাকছেন নেটফ্লিক্সের ছবিতে। বছরজুড়েই নেটফ্লিক্সের পর্দায় দেখা যাবে এ তারকাদের।
উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে আছে বড় বাজেটের ‘রেড নোটিস’, ছবিতে অভিনয় করবেন গাল গাদত। আছে রেজিনা কিং ও ইদ্রিস এলবা অভিনীত ওয়েস্টার্ন দ্য হার্ডার দে ফল। ‘ডোন্ট লুক আপ’ ছবির তারকাদের তালিকা ভক্তদের অধীর করে তুলতে পারে। এ ছবিতে একসঙ্গে দেখা যাবে জেনিফার লরেন্স, লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও, আরিয়ানা গ্রান্ডে, টিমোথি শালামে ও মেরিল স্ট্রিপকে।
নেটফ্লিক্স এখন দুনিয়ার সবচেয়ে বড় স্ট্রিমিং সাইট। মহামারীর মধ্যেও নতুন ও প্রিমিয়াম ছবি মুক্তি দেয়ার ক্ষেত্রে নেটফ্লিক্স ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে।
মহামারীতে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের চলচ্চিত্র শিল্পে স্থবিরতা নেমে এসেছে। হলে গিয়ে স্বাভাবিকভাবে মানুষ কবে সিনেমা দেখতে পারবে তার কোনো নিশ্চিত ভবিষ্যদ্বাণী কেউ করতে পারছেন না। এ নিয়ে বেশ চিন্তিত বড় বড় স্টুডিও। এ সুযোগে বাজার প্রসারিত করতে পেরেছে নেটফ্লিক্স। বড় স্টুডিওগুলো তাদের বছরের সময়সূচি নির্ধারণ করতেই হিমশিম খাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে ভ্যাকসিনেশন অভিযান আশানুরূপ গতি পায়নি। দেশটিতে সিনেমা হলগুলো খুলতে এখনো বেশ কয়েক মাস সময় লাগবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।