উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক সাপ্লাই চেইনের সঙ্গে যুক্ত করাতে হবে

‘বাংলাদেশে সিএমএসএমইএস: জার্নি, চ্যালেঞ্জেস অ্যান্ড ফিউচার ডিরেকশন’ শীর্ষক ওয়েবিনারে বক্তারা বলেন, আমাদের উদ্যোক্তাদের এখন আন্তর্জাতিক সাপ্লাই চেইনের সঙ্গে লিংক করিয়ে দেয়াটা এখন সময়ের দাবি এবং সিএমএসএমই উন্নয়ন ও চরম দারিদ্র্য দূরীকরণে তরুণদের ভূমিকাই অগ্রগণ্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনোভেশন, ক্রিয়েটিভিটি অ্যান্ড এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ (আইসিই) সেন্টার এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে গৃহীত ‘রিভাইভ’ প্রকল্পের অংশ হিসেবে গতকাল ভার্চুয়াল মাধ্যম জুমে এই ওয়েবিনারের আয়োজন করা হয়। আইসিই সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মো. রাশেদুর রহমানের সঞ্চালনায় ও সেন্টারের ভাইস চেয়ারম্যান ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে এ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী এবং বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর একেএম সাজেদুর রহমান, মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ এবং ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি খুরশিদ আলম।

ড. গওহর রিজভী তার বক্তব্যের শুরুতে কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি (সিএমএসএমই) খাতের উন্নয়নে আইসিই সেন্টারের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। তিনি বলেন, আমাদের উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক সাপ্লাই চেইনের সঙ্গে লিংক করিয়ে দেয়াটা এখন সময়ের একটা দাবিতে পরিণত হয়েছে।

আদিবাসীদের জন্য কাজ করার অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, তাদের জন্য যেসব প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম নেয়া হচ্ছে সেগুলো খুব সময়োপযোগী উদ্যোগ কিন্তু সমস্যা তৈরি হয় তাদের মার্কেটের সঙ্গে লিংক করানোর ক্ষেত্রে। ২০৩০-এর লক্ষ্য পূরণের জন্য দেশের এমন পিছিয়ে পড়া প্রান্তিক শ্রেণীকে সামনে আনতে হবে। এক্ষেত্রে আইসিই সেন্টার একটি অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করতে পারে।

নিহাদ কবির বলেন, প্রথমে সিএমএসএমই খাতকে একসঙ্গে না দেখে বরং কুটির, ক্ষুদ্র, ছোট এবং মাঝারি শিল্পকে আলাদাভাবে বিবেচনা করে প্রতিটির জন্য ভিন্ন ভিন্ন নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন দরকার। ছোট ও মাঝারি শিল্পকে যখন একীভূত করে ফেলা হয় তখন নীতিগুলো কোনো কোনো ক্যাটাগরির জন্য প্রয়োজনের বাইরে জটিলতার সৃষ্টি করে, যেটা ব্যবসায়ীদের আন্তর্জাতিকীকরণের জন্য ক্ষেত্র বিশেষে সমস্যার সৃষ্টি করে।

তিনি রিভাইভ প্রকল্পের অধীনে বাংলাদেশের ৬৪টি জেলার ম্যাপিং উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, এর মাধ্যমে জেলাভিত্তিক শিল্পায়নের সুযোগ এবং সম্ভাবনার দ্বারকে উন্মোচন করা যাবে।

আইসিই সেন্টারের নির্বাহী পরিচালক মো. রাশেদুর রহমান তার বক্তব্যে রিভাইভ প্রকল্পের কার্যাবলি তুলে ধরেন। দেশের সিএমএসএমই ব্যবসায়ীরা কেন আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এখনো অনেকটা পিছিয়ে আছে সেই বিষয়টি তুলে ধরার জন্য এ প্রকল্পের আওতায় সিএমএসএমই খাতের ব্যবসায়ীদের আন্তর্জাতিকীকরণ বিষয়ক একটি গবেষণাপত্রের কাজ হচ্ছে বলে তিনি জানান।

এ আয়োজনে স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড মুহাম্মদ শরীয়ত উল্লাহ বলেন, আন্তর্জাতিকীকরণের জন্য এ খাতের ব্যবসায়ীরা কতটুকু আগ্রহী এবং তারা কী ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তা এ গবেষণাপত্রের মাধ্যমে তুলে আনা হবে, যাতে পরবর্তী সময়ে এ খাতে ব্যবসায়ীদের জন্য সঠিক নীতিনির্ধারণে এটি কাজে আসে।

সিএমএসএমই খাতের ব্যবসায়ীদের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে প্রবেশ ও প্রসারের জন্য ক্লাস্টারভিত্তিক উন্নয়ন প্রয়োজন বলে মত দেন ড. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *