পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণে আহত ৫

দেশজুড়ে জঙ্গি হামলার আশঙ্কায় পুলিশ বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা জারির মধ্যেই বোমা বিস্ফোরণে কেঁপে উঠল ঢাকা মহানগরীর পল্লবী থানা। গতকাল সকালে এ বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় পুলিশের চার সদস্যসহ পাঁচজন আহত হয়েছে। তবে এ ঘটনায় কোনো ধরনের জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পল্লবী থানা সূত্র জানায়, সকাল ৭টার দিকে বিকট শব্দে বোমা বিস্ফোরণে গোটা থানা ভবন কেঁপে ওঠে। এ সময় থানার বেশ কয়েকটি জানালার কাচ ভেঙে পড়ে। বিস্ফোরণে থানার পরিদর্শক (অভিযান) ইমরানুল ইসলাম, উপপরিদর্শক (এসআই) সজীব খান, রুমি বেভরেজ হায়দায়, শিক্ষানবিশ সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) অঙ্কুশ কুমার এবং পরিদর্শক ইমরানুল ইসলামের ব্যক্তিগত নিরাপত্তাকর্মী বেসামরিক ব্যক্তি রিয়াজুল ইসলাম আহত হন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার ওয়ালিদ হোসেন এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়ালটি ব্লকের আবাসিক সার্জন আলাউদ্দিন জানান, আহত সবাই আশঙ্কামুক্ত। তবে রুমির বাঁ হাতে স্প্লিন্টারের আঘাত রয়েছে। রিয়াজুল ইসলামের হাতে আঘাত আছে। তার শরীরও ঝলসে গেছে। ইমরানুলের পায়ে স্প্লিন্টারের আঘাত ও সজীবের কানে শব্দের আঘাত লেগেছে। এছাড়া অঙ্কুশ কুমার চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন। তাকে জাতীয় চক্ষু ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।

পল্লবী থানা পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে থানার বিশেষ টিম পল্লবী-কালশী কবরস্থানে অভিযান চালিয়ে তিন ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে। তাদের কাছ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, চারটি গুলি ও একটি ডিজিটাল ওয়েট মেশিনের মতো ডিভাইস উদ্ধার করা হয়। সেগুলো থানার ডিউটি অফিসারের রুমে রাখা হয়। গতকাল সকালে ডিজিটাল ওয়েট মেশিনের মতো ডিভাইসটি বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণে থানার দ্বিতীয় তলার একটি ঘরের জানালার কাচ ভেঙে যায়। ডিজিটাল ডিভাইসটির মধ্যে বোমা রাখা ছিল।

পুলিশ আরো জানায়, গ্রেফতারকৃত তিন সন্ত্রাসী শাহাদাত বাহিনীর সহযোগী। স্থানীয় এক রাজনীতিককে হত্যার পাঁয়তারা করা হচ্ছে—এ তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। তাদের সঙ্গে জঙ্গিসংশ্লিষ্টতা নেই বলে থানা পুলিশ প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছে। তবে বিষয়টি আরো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) কৃষ্ণপদ রায়। তিনি বলেন, এরা জঙ্গি না, এরা সন্ত্রাসী। এ ঘটনায় জঙ্গিবাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইমের স্পেশাল অ্যাকশন গ্রুপের অতিরিক্ত উপকমিশনার রহমত উল্লাহ বলেন, বিস্ফোরণের আলামত সংগ্রহ করা হয়েছেন। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস (আইইডি) জাতীয় কিছু বিস্ফোরিত হয়েছে।

অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় আরো জানান, পল্লবী থানা পুলিশ ও মিরপুরের ডিবির নেতৃত্বে একটা টিম কাজ করছিল কয়েক দিন ধরে। একটি গ্রুপ ক্রাইম করতে পারে বা ক্রাইম হতে পারে, এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে কালশী কবরস্থানের দিকে পুলিশের একটি টিম যায়। এসময় তারা তিনজনকে গ্রেফতার করে। তবে সেখান থেকে বেশ কয়েকজন পালিয়ে যায়। সেখান থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়। একটি ডিভাইস উদ্ধার করা হয়, যেটি ওয়েট মেশিনের মতো।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *