পরিবার ও বন্ধুদের জন্য জীবনের ঝুঁকি

স্কটল্যান্ডের এক কলেজছাত্রী অ্যানা আর কিছুদিন পরই কলেজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আগে এক বছর দুনিয়াটা ঘুরে দেখতে চায়। যদিও তার বাবা তাতে রাজি হয় না। বড়দিনের ছুটির মাত্র কদিন আগেই হঠাৎ করে পুরো শহরের মানুষ জম্বিতে পরিণত হতে থাকে। আর কোনো উপায় না থাকায় অ্যানা নিজের পরিবার ও বন্ধুদের বাঁচাতে বিরাট ঝুঁকি নেয়।

এমন গল্পকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে ‘অ্যানা অ্যান্ড দি অ্যাপোক্যালিপস’ ছবির গল্প। ২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্রিটিশ জম্বি মিউজিক্যাল ঘরানার এ ছবিটি মূলত ‘শন অব দ্য ডেড’ আর ‘লা লা ল্যান্ড’ ছবি দুটোর মিলিত সংস্করণ বলা যেতে পারে। হাস্যরস, জম্বি ও সংগীত তিনটি বিষয়কে বেশ সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে ছবিতে। যদিও মানুষের জম্বি হওয়ার পেছনে কোন ভাইরাস দায়ী সে বিষয়ে ছবিতে কোনো বর্ণনা নেই।

ছবির গল্পে দেখা যায়, অ্যানা এবং তার বন্ধু জন, ক্রিস, স্টেফ ও নিক যখন বুঝতে পারে শহরজুড়ে জম্বি ছড়িয়ে পড়েছে তখন তারা বেশ ভীত হয়ে পড়ে। কারণ তাদের পরিবারের অনেক সদস্যই তাদের কলেজের অনুষ্ঠানে গিয়েছিল। তারা ফিরেছে কিনা কেউই জানে না। পরদিন সকালে অ্যানা আর জন যখন কলেজের উদ্দেশে রওনা হয় তখনই একটি জম্বি তাদের আক্রমণ করে বসে। বাচ্চাদের খেলনা দোলনা দিয়ে জম্বিকে তারা হত্যা করে এ যাত্রায় বেঁচে যায়। তবে স্কুলে আর যাওয়া হয় না।

রাতে তারা খবর দেখতে পায় মিলিটারি সদস্যরা তাদের কলেজকে ক্যাম্প বানিয়ে যারা এখনো সুস্থ আছে তাদের উদ্ধার করবে। পরদিন সকালে অ্যানা, জন, ক্রিস ও স্টেফ রওনা হয় কলেজের উদ্দেশে। কিন্তু আবারো সবাই জম্বি আক্রমণের শিকার হয়। বাধ্য হয়ে তারা ফিরে আসে। অ্যানা বলে, তার মাথায় একটা পরিকল্পনা আছে। সে অনুযায়ী কাজ করলে তারা তাদের কলেজে পৌঁছতে পারবে আর মিলিটারির সাহায্যও পাবে। এমনকি অ্যানা তার বন্ধুদের এ বিপত্কালীন পরিস্থিতিতেও বলে, ‘সবকিছু শেষ হলে আমি দুনিয়া ঘুরতে বের হবো।’

অ্যানার পরিকল্পনা অনুযায়ী তার বন্ধুরাও পদক্ষেপ নেয়। কিন্তু সব পরিকল্পনাই তো আর বাস্তবায়ন হয় না। পরদিন অ্যানা ও তার বন্ধুরা জানতে পারে, মিলিটারি সবাই জম্বিতে পরিণত হয়ে গেছে। এখন তাদের পরিবারের সবাইকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ ঝুঁকি নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

৯৮ মিনিট দৈর্ঘ্যের ছবিটি ২০১৭ সালের ২২ সেপ্টেম্বর ফ্যান্টাস্টিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রিমিয়ার প্রদর্শন করা হয়। এরপর ২০১৮ সালের ৩০ নভেম্বর যুক্তরাজ্যে মুক্তি দেয়া হয়। জন ম্যাকফিলের পরিচালনা এবং রডি হার্ট ও টমি রেইলির সংগীত পরিচালনায় ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ইলা হান্ট (অ্যানা), ম্যালকম কামিং (জন), সারা সোয়ার (স্টেফ), ক্রিস্টোফার লেভক্স (ক্রিস), বেন উইগিনস (নিক), মার্লি সিউ, মার্ক বেনটন প্রমুখ। ছবিটি সমালোচকদের কাছে বেশ ভালো সাড়া পায়। প্রায় প্রত্যেক সমালোচকই ছবিটির পাশাপাশি এর মিউজিকের বেশ প্রশংসা করেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *