করোনা মহামারির শুরু থেকেই নিজ এলাকার মানুষদের বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মুর্তজা। জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক এবার নড়াইলে নিজ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহকারী মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দিলেন। মাশরাফির ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, তার আর্থিক সহায়তায় জেলার তিন উপজেলায় ২ জন করে মোট ৬ জন টেকনিশিয়ানকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরো মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ দেয়ার ভাবনা আছে মাশরাফির। আজ আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করবেন তারা। এছাড়া নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশনের নিজস্ব অ্যাম্বুলেন্সটিও করোনা ভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ এবং ল্যাবে পাঠানোর কাজে ব্যবহার করা হবে।
নড়াইলে কভিড-১৯ নমুনা সংগ্রহে অভিজ্ঞ মেডিকেল টেকনোলজিস্টের (ল্যাব) ৮টি পদের বিপরীতে লোকবল মাত্র ৪ জন। একজন আবার অসুস্থ হয়ে ছুটিতে রয়েছেন। কালিয়া উপজেলায় ৩টি পদের সবকটি শূন্য। সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয়ে একটিই পদ, সেটিও খালি। আর লোহাগড়া উপজেলায় দুজনের জায়গায় আছেন একজন। ফলে ব্যবহৃত হচ্ছিল প্রয়োজনীয় নমুনা সংগ্রহের কাজ। এ সংকট মেটাতেই বেসরকারিভাবে টেকনোলজিস্ট নিয়োগের উদ্যোগ নেন মাশরাফি।
গত রোববার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, নড়াইল এক্সপ্রেস ফাউন্ডেশন, বেসরকারি ডায়াগনস্টিক ও প্যাথলজিক্যাল
ল্যাব মালিক সমিতির যৌথ সভায় ভিডিও কলের মাধ্যমে যুক্ত হন মাশরাফি। সভায় নিজ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে টেকনোলজিস্ট নিয়োগে আর্থিক সহযোগিতার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। এছাড়া করোনা আক্রান্ত এলাকা লকডাউন করে আক্রান্তদের সঠিক চিকিৎসা, তাদের খোঁজ-খবর নেয়া এবং প্রয়োজনে খাবারের ব্যবস্থা করার কথাও জানান মাশরাফি।
পরিবারে করোনার হানা
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। কিন্তু তার পরিবারের ওপর একের পর এক আক্রমণ করে যাচ্ছে ভাইরাসটি। কিছুদিন আগে মাশরাফির নানা কভিড-১৯ পজিটিভ হন। এবার তার পরিবারের আরো দুই সদস্যের পজিটিভ হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন নড়াইল সিভিল সার্জন আবদুল মোমেন।
মাশরাফির শাশুড়ি হোসনে আরা ও তার স্ত্রী সুমনা হকের ছোট বোন রিপার মেয়ে আগামীর নমুনায় করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি মিলেছে। এ বিষয়ে নড়াইল সিভিল সার্জন আবদুল মোমেন বলেন, ‘গত শনিবার তার (মাশরাফির শাশুড়ি) করোনা নমুনা সংগ্রহ করা হয়। গতকাল রোববার রাতে সাংসদ মাশরাফির শাশুড়ির রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। বতর্মানে তিনি বাড়িতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।’ পরিবারের সদস্যদের করোনা আক্রান্ত হওয়া নিয়ে বিচলিত হয়ে পড়েছেন মাশরাফি। এর আগে করোনায় আক্রান্ত হন মাশরাফির নানা ডা. মাসুদ আহমেদ। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইউরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তিনি।