বলিউড নায়ক সুশান্ত সিং রাজপুতের আত্মহত্যার ঘটনা আজ দেশ- বিদেশের শিরোনাম। কি এমন ঘটেছিল যে মাত্র ৩৪ বছর বয়সেই জীবন থেকে ছুটি নিতে হলো সুশান্তকে? তিন কিস্তিতে প্রকাশিত হবে মানবজমিন এর বিশেষ অনুসন্ধান। আজ প্রথম কিস্তি প্রকাশ হলো-
চাঁদে এক টুকরো জমি কিনেছিলেন সুশান্ত সিং রাজপুত। ইন্টারন্যাশনাল লুনার সোসাইটি যখন কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে চাঁদে জমি বিক্রির কথা ঘোষণা করেছিল তখনই এই জমি কিনেন বলিউড তারকা। আসলে মহাকাশ, চাঁদ তাকে খুব টানতো। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তার অতি প্রিয় আলমির ডি ৬০০ টেলিস্কোপটি নিয়ে তিনি বান্দ্রার বহুতলের ছাদে বসে আকাশ দেখতেন। চন্দ্রাহত হয়েই কি চলে গেলেন সুশান্ত? দু’বছর আগে সোস্যাল মিডিয়ায় সুশান্ত তার পঞ্চাশটি স্বপ্নের কথা লিখেছিলেন। তার একটিতে ছিল নভোচর হওয়ার স্বপ্ন।
রোববার দুপুরে সুদূর মহাকাশযাত্রী হয়ে গেলেন তিনি। সুশান্তের ঝুলন্ত দেহটি যখন সিলিং ফ্যান থেকে নামানো হয় তখন তার পরনে ছিল ধূসর রঙের শর্টস আর টি শার্ট। তার মনের ধূসরতার সন্ধান কেউ কি কোনোদিন নিয়েছিল? বন্ধুদের সঙ্গে আগের রাতে বান্দ্রার ফ্ল্যাটে পার্টি করেছিলেন সুশান্ত। রোববার বেলা দশটা পর্যন্ত ঘুমান। তারপর এক গ্লাস জুস খান। এরপর ঘরের দরজা বন্ধ করে দেন। বন্ধুরা এসে ঘরের দরজা খোলার চেষ্টা করেন। দরজা না খোলায় সুশান্তের মোবাইলে ফোন করেন। জবাব না আসায় দরজা ভেঙে দেখা যায় তিনি সিলিং এ ঝুলছেন। আত্মঘাতী হয়েছেন। মিনিটের মধ্যে সুশান্তের সুইসাইড এর সঙ্গে দিন কয়েক আগে তার প্রাক্তন সেক্রেটারি দিশা সাইলানের আত্মহত্যার ঘটনাকে জড়িয়ে সংবাদের বন্যা বয়ে যায়। তবে কি দিশার সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন সুশান্ত? তাই ৯ই জুন দিশা বহুতল থেকে ঝাঁপিয়ে আত্মহত্যা করলেন। আর ১৪ই জুন সুশান্ত! মানবজমিন অনুসন্ধান করে জানতে পেরেছে যে দুই আত্মহত্যার মধ্যে বিন্দুমাত্র সম্পর্ক নেই। বয়ফ্রেন্ড রোহিত রাইযের সঙ্গে সম্পর্কে অবনতিতেই দিশা আত্মঘাতী হন। সুশান্ত তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করে বার্তা পাঠিয়েছিলেন। তখন কি তিনি জানতেন পাঁচদিন পরে তার জন্যও বার্তা পাঠাবেন স্বয়ং দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি? একজন তরতাজা যুবক যার ছবির মতো বাড়িটি সাজিয়ে দিয়েছিল এশিয়ান পেইন্টস, যার গ্যারাজ এ অডিসহ একাধিক গাড়ি, যে ২০ কোটি টাকা দিয়ে সমপ্রতি একটি পেন্টহাউজ কিনেছিল, ছবি প্রতি যার পারিশ্রমিক সাত কোটি টাকা। সে কোনো মানসিক অবসাদের স্বীকার হয়ে জীবন থেকে বিদায় নিলো? সুশান্তের ঘরে ছানবিন চালিয়ে পুলিশ এন্টি ডিপ্রেশন ড্রাগ পেয়েছে। পেয়েছে মেডিকেল কাগজপত্র। সুশান্তের মামা তার মৃত্যুর সি বি আই তদন্ত চেয়েছেন। পুলিশ এখনো কোনো রহস্য দেখছে না এই মৃত্যুতে।