ঢাকার চারপাশে ভাঙা হবে ১৩ সেতু

বাবুবাজার এবং টঙ্গী রেল ব্রিজসহ ঢাকার চারপাশে নদ-নদীর ওপর নির্মিত কম উচ্চতা সম্পন্ন ব্রিজ পুনর্নির্মাণ অথবা ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

গতকাল মন্ত্রণালয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামের কর্ণফুলীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দখলমুক্ত, দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য প্রণীত মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন অগ্রগতি এবং মেঘনা নদী দখলমুক্ত, দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধিকল্পে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নসংক্রান্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, ঢাকার চারপাশে নদ-নদী, খালের ওপর ১৩টি ব্রিজ চিহ্নিত করা হয়েছে, যেগুলো স্বল্প উচ্চতাসম্পন্ন এবং নৌ চলাচলের অনুপযোগী। নৌ চলাচল ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখতে এসব ব্রিজের উচ্চতা বৃদ্ধি করার কোনো বিকল্প নেই। তাই নৌ চলাচল ব্যবস্থা অক্ষুণ্ন রাখতে এসব ব্রিজ পুনর্নির্মাণ অথবা ভেঙে ফেলে নতুনভাবে নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

১৩টি ব্রিজের মধ্যে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর-এলজিইডির ছয়টি, সড়ক ও সেতু বিভাগের ছয়টি এবং রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের একটি রয়েছে বলে জানান মন্ত্রী।

মো. তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার আশপাশের নদীগুলোকে দূষণমুক্ত রাখতে নদীতীরবর্তী যেসব শিল্প-কারখানা রয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করে এফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্লান্ট (ইটিপি) স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নদীতীরবর্তী প্রায় দুই হাজারের বেশি শিল্প-কলকারখানা চিহ্নিত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১৪ শত শিল্প-কলকারখানায় ইটিপি স্থাপন করা হয়েছে।

যেগুলোয় ইটিপি নেই সেগুলোয় অভিযান চালিয়ে জরিমানা করা হচ্ছে এবং ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি কারখানা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শিল্প-কলকারখানায় ইটিপি সার্বক্ষণিক সচল রাখতে পরিবেশ অধিদপ্তর বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় আধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করতে একটি প্রকল্প নেয়া হয়েছে।

দখলমুক্ত জায়গা সংরক্ষণ প্রক্রিয়া নিয়ে মন্ত্রী বলেন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় কর্তৃক নদ-নদী পাড় অথবা জায়গা দখলমুক্ত করে যেগুলো সিটি করপোরেশনের মধ্যে সেগুলো তাদের কাছে হস্তান্তর করবে এবং সিটি করপোরেশন এসব জায়গায় সংরক্ষণ, সৌন্দর্যবর্ধন নগরায়ণ এবং ইকোপার্ক নির্মাণ করবে। উদ্ধারকৃত জায়গা যাতে পুনরায় দখল না হয়, সেজন্য যা যা করা দরকার তার সবই করা হবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনসহ সমন্বিত উদ্যোগে অবৈধভাবে দখলকৃত নদ-নদী, খাল-জলাশয়সহ সরকারি স্থাপনা দখলমুক্ত করা হচ্ছে এবং অভিযান চলমান রয়েছে।

এর আগে সভায় চট্টগ্রামের কর্ণফুলীসহ ঢাকার চারপাশের নদীগুলো দখলমুক্ত, দূষণরোধ এবং নাব্যতা বৃদ্ধির জন্য মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন সংক্রান্ত কমিটির সভাপতি মো. তাজুল ইসলাম বলেন, বালু নদীতে নৌ চলাচল, নদীর তীরে নগরায়ণ এবং সৌন্দর্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিগগিরই কার্যক্রম হাতে নেয়া হবে।

সভায় পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলম এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *