করোনাভাইরাস মহামারী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার মধ্য দিয়ে কীভাবে সংকট মোকাবেলা করতে হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেটা বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। গতকাল সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তথ্যমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
এ দুর্যোগ মহামারীকে বাংলাদেশ সংকট মোকাবেলায় নিজেকে উদাহরণ হিসেবে দাঁড় করাতে সক্ষম হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, করোনার শুরুতে যারা শঙ্কা প্রকাশ করেছিল, পত্রিকায় বিবৃতি দিয়েছিল, টেলিভিশনের পর্দা গরম করেছিল যে, হাজার হাজার লাশ পড়ে থাকবে অনাহারে হাজার হাজার মানুষ মারা যাবে, তাদের সেই শঙ্কাকে ভুল প্রমাণিত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংকট কীভাবে মোকাবেলা করে দেশকে এগিয়ে নেয়া যায় তার উদাহরণ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে।
তিনি বলেন, পৃথিবীর সবচেয়ে ঘনবসতি দেশ হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ করোনা মহামারীকে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছে। করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ উপমহাদেশে তৃতীয় এবং বিশ্বে ২০তম। বিশ্বের অন্য দেশের মতো আমরা নিজেকে করোনা থেকে রক্ষা করতে পারিনি। কিন্তু এখানে যেভাবে নিয়ন্ত্রণ হয়েছে, তা পৃথিবীর সামনে দৃষ্টান্ত। বিএনপি ও তার মিত্ররা এবং রাত ১২টার পর যারা টেলিভিশন গরম করে, তারা এটা স্বীকার না করলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, হাঙ্গেরি আমাদের কাছে পাঁচ হাজার টিকা চেয়েছে। আমাদের যে স্টক আছে সেখান থেকে। আমরা দেব। বলিভিয়াও আমাদের কাছে চেয়েছে, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আনা ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় বিএনপির সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি তার বক্তব্যে ঘুষ, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, হত্যা-ধর্ষণ নিয়ে কোনো কথা বলেননি এবং দিকনির্দেশনা দেননি বলে আমি তাকে ধন্যবাদ দিতে পারছি না। স্বাস্থ্য ও আর্থিক খাতের সমালোচনা করে সিরাজ বলেন, টাকা পাচারকারীরা অদৃশ্য-অধরা রয়ে গেছে। এদের পৃষ্ঠপোষক কারা? এরা সবাই সরকারের মদদপুষ্ট, সরকারের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত। বেসিক ব্যাংকের আব্দুল হাই বাচ্চু থেকে আজকের প্রশান্ত কুমার হালদার পর্যন্ত সরকারের ঘনিষ্ঠ। সরকারের ঘনিষ্ঠ লোককে সুবিধা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। এ সংসদের পাপুল। যাকে ঘুষের দায়ে কুয়েত সরকারের বিচার বিভাগ জেল দিয়েছে। পাপুল শুধু সংসদ নয়, এ দেশকে কলঙ্কিত করেছে। অর্থ পাচার মামলায় রায় আরো কঠিন হবে। দুর্নীতির কালোবিড়াল কোথায় নেই?
আওয়ামী লীগ নেতাদের সমালোচনা করে বিএনপির সিরাজ বলেন, সরকারি দলের সর্বস্তরের নেতারা গ্রাম পর্যায় থেকে ইউনিয়ন থেকে রাজধানী পর্যন্ত সর্বগ্রাসী দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। বিচারহীন দেশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। চলমান সংসদের এক ডজন সংসদ সদস্য দুর্নীতি, সরকারি-বেসরকারি জমি দখল, বিদেশে অর্থ পাচার, মানব পাচারে জড়িত। তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই।
এ সময় সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা প্রতিবাদ করতে থাকেন।