চীনের সঙ্গে অর্থপূর্ণ সংলাপে বসতে রাজি তাইওয়ান

ক্রমবর্ধমান সামরিক উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে চীনের সঙ্গে সমতার ভিত্তিতে অর্থপূর্ণ আলোচনায় বসার আগ্রহ ব্যক্ত করছেন তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন। খবর রয়টার্স।

স্বায়ত্তশাসিত তাইওয়ানকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন ভূখণ্ড মনে করে বেইজিং। তাইওয়ান প্রণালিতে সামরিক মহড়া বা অঞ্চলটির কাছাকাছি চীনের সামরিক প্রস্তুতি বাড়িয়ে তোলার জের ধরে দুই দেশের মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা জারি রয়েছে।

এদিকে কয়েক সপ্তাহ ধরে তাইওয়ানের কাছে চীনা বিমান বাহিনী তাদের তত্পরতা বাড়িয়ে তুলেছে, দুই দেশের সীমান্তবর্তী সংবেদনশীল রেখাটি অতিক্রম করাসহ ক্রমবর্ধমানভাবে তাইওয়ানকে চাপের মধ্যে রেখেছে দেশটি। চীন বলছে, এটি মূলত তাদের বিরুদ্ধে তাইপে ও ওয়াশিংটনের মিলিত ‘ষড়যন্ত্রের’ প্রত্যুত্তর, কেননা তাইওয়ানকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের ক্রমেই বেড়ে চলা সমর্থন বেইজিংকে ক্ষুব্ধ করেছে।

জাতীয় দিবস উদযাপনের ভাষণ প্রদানের সময় সাই ইং-ওয়েন বর্তমান পরিস্থিতিকে ‘বেশ উত্তেজনাকর’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি আরো বলেন, দক্ষিণ চীন সাগরে বিরোধের পাশাপাশি চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধ, হংকংয়ে চীনের ক্র্যাকডাউন এ অঞ্চলের গণতন্ত্র ও শান্তিকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এনে দাঁড় করিয়েছে। তাই বেইজিং যদি তাইওয়ানের আহ্বানকে গুরুত্ব দেয় ও সম্মিলিতভাবে সমন্বয় সাধন এবং শান্তিপূর্ণ সংলাপে মনোযোগী হয়, সেক্ষেত্রে নিশ্চিতভাবেই আঞ্চলিক উত্তেজনার সমাধান সম্ভব।

যতক্ষণ পর্যন্ত বেইজিং কর্তৃপক্ষ নিজ থেকে বিরোধিতার সমাধান এবং আন্তঃসম্পর্কের উন্নতি করতে ইচ্ছুক থাকবে এবং সমতা ও মর্যাদা বজায় রাখবে ততক্ষণ অর্থবহ সংলাপের জন্য আমরা কাজ করতে ইচ্ছুক বলে জানান তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট।

তবে ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সাই ইং-ওয়েন নির্বাচিত হওয়ার পর চীন দেশটির সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়। তাছাড়া চীন মনে করে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি এখনো দেশটি তাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মানসিকতা ধরে রেখেছে।

এদিকে সাই ইং ওয়েন আরো বলেন, তাইওয়ান সীমান্তে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে তিনি বদ্ধপরিকর, তবে উভয় পক্ষেরই এ দায়িত্ব রয়েছে।

তাইওয়ানের সশস্ত্র বাহিনীকে শক্তিশালী করা প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার অগ্রাধিকারের মধ্যে রয়েছে, তবে তিনি যেমন লড়াইয়ে আগ্রহী নন, তেমনি লড়াই ঘিরে ভীতও নন। তাছাড়া নিজেদের সার্বভৌমত্ব এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি তার প্রতিশ্রুতির পরিবর্তন হবে না। তিনি কৌশলগত নমনীয়তা বজায় রাখা এবং পরিবর্তন ঘিরে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন বলে উল্লেখ করেন।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে তার সেনাবাহিনী আধুনিকীকরণের জন্য চাপ দিচ্ছে। কারণ দেশটি যেন চীনের আক্রমণ প্রতিহত করার সমর্থ অর্জন করতে পারে, শৌখিন প্রতিপক্ষ নয় বরং শক্ত প্রতিরোধ গড়তে সক্ষম হয়।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *