কো-চেয়ারের দায়িত্ব সফলভাবে সম্পন্ন করল বাংলাদেশ

মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মান নির্ধারণকারী সংস্থা ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) আঞ্চলিক সংস্থা এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিংয়ের (এপিজি) কো-চেয়ারের দায়িত্ব সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান কর্মকর্তা আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান।

মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশের অঙ্গীকার বিবেচনায় ২০১৮-২০ মেয়াদে বাংলাদেশ এপিজির কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালনের জন্য নির্বাচিত হলে সরকার এজন্য বিএফআইইউর প্রধান কর্মকর্তাকে মনোনয়ন দেয়। কো-চেয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে এপিজির বিভিন্ন নীতিনির্ধারণী বিষয় বাস্তবায়ন, এপিজির গভর্ন্যান্স, সংস্থাটির পরিচালনা, বিভিন্ন সভায় অংশগ্রহণ, গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করাসহ এপিজির স্থায়ী কো-চেয়ার অস্ট্রেলিয়ার পাশাপাশি এ সময়কালের জন্য রাজী হাসান এপিজিকে নেতৃত্ব দেন। তিনি এফএটিএফ স্ট্র্যাটেজিক রিভিউয়ের জন্য গঠিত এপিজির অ্যাডহক কমিটির কো-চেয়ারেরও দায়িত্ব পালন করেন।

অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত এপিজির ২২তম বার্ষিক সভার প্লেনারিতে হংকং চায়না, চাইনিজ তাইপে, সলোমন আইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও পাকিস্তানের মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধ পরিপালন ব্যবস্থা মূল্যায়ন কার্যক্রম মিউচুয়াল ইভ্যালুয়েশন সম্পন্ন হয় এবং রিপোর্ট অনুমোদন হয়। এপিজি কো-চেয়ার আবু হেনা মোহা. রাজী হাসান ওই প্লেনারিতে হংকং চায়না, চাইনিজ তাইপে ও সলোমন আইল্যান্ডের মিউচুয়াল ইভ্যালুয়েশনসংশ্লিষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করেন এবং সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সর্বসম্মতিক্রমে রিপোর্ট অনুমোদন করেন।

এছাড়া ২০১৮-২০ মেয়াদে তিনি এপিজি সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বিভিন্ন প্রস্তাবনা পর্যালোচনা, যেমন এপিজি বাজেট, টার্মস অব রেফারেন্স পরিবর্তন, সদস্যসংক্রান্ত বিষয়, এপিজির গঠন ও কার্যক্রমসংক্রান্ত বিষয়াদি, বিভিন্ন পেপার ও রিপোর্টের চূড়ান্ত অনুমোদন দেন।

কো-চেয়ার হিসেবে এ বছর বাংলাদেশে এপিজির ২৩তম বার্ষিক সভা আয়োজনের সব প্রস্তুতি থাকা সত্ত্বেও বিশ্বব্যাপী নভেল করোনাভাইরাস মহামারীর প্রাদুর্ভাবজনিত পরিস্থিতির কারণে সব সদস্য রাষ্ট্রের মতামতের ভিত্তিতে তা বাতিল করা হয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর আলোচনা ও সিদ্ধান্ত এপিজির নীতিনির্ধারণ কমিটি গভর্ন্যান্স কমিটির মাধ্যমে গৃহীত হয়। গভর্ন্যান্স কমিটির ২৩ জুলাই অনুষ্ঠিত সভা পরিচালনার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এপিজি কো-চেয়ারের দায়িত্ব পালন শেষে বাংলাদেশের পর মালয়েশিয়ার ডেপুটি গভর্নর মারজুনিসাম ওমর পরবর্তী কো-চেয়ারের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। তবে বিদায়ী কো-চেয়ার হিসেবে বাংলাদেশ আগামী বছরের জুলাই পর্যন্ত গভর্ন্যান্স কমিটিতে প্রতিনিধিত্ব করবে।

এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের জন্য এফএটিএফের আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত এপিজির প্রতিষ্ঠাকাল থেকে সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ এর সব বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশগ্রহণ করেছে। এছাড়া বাংলাদেশ এপিজি স্টিয়ারিং গ্রুপে (বর্তমানে এপিজি গভর্ন্যান্স কমিটি) ২০০৩-০৪, ২০০৪-০৫, ২০১০-১১ এবং ২০১১-১২ মেয়াদে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করেছে।

মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে কেন্দ্রীয় সংস্থা হিসেবে বিএফআইইউ বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে এপিজির প্রাইমারি কন্ট্যাক্ট পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে আসছে। এছাড়া বিএফআইইউ এপিজির বিভিন্ন ওয়ার্কিং গ্রুপে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছে। পাশাপাশি আঞ্চলিক পর্যায়ে মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বাংলাদেশ ও এর প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *