নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে যতটা আশঙ্কা করা হয়েছিল, রফতানিতে ততটা ভাটা পড়েনি। অন্যদিকে আমদানি হয়েছে কম। এ দুইয়ের প্রভাবে গত মাসে চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রেকর্ড উচ্চতায় উঠে গেছে। খবর ব্লুমবার্গ।
ডলারের ভিত্তিতে মে মাসে চীনের রফতানি আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। বিপরীতে আমদানিতে পতনের হার অনেক বেশি। গত মাসে চীনের আমদানি কমেছে ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ। ফলে দেশটির বাণিজ্য উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২৯৩ কোটি ডলার।
ইউয়ানের ভিত্তিতে চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে চীনের বস্ত্র খাতে রফতানি বেড়েছে ২৫ দশমিক ৫ শতাংশ। আর এক্ষেত্রে মাস্কের চাহিদা ও সরবরাহ বেড়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। উল্লেখ্য, মেশিনারির পর বস্ত্র চীনের সবচেয়ে বড় রফতানি খাত।
করোনা মহামারীর কারণে বৈশ্বিক চাহিদায় এখনো মন্দা ভাব থাকলেও চীনের অভ্যন্তরীণ বাজারে চাহিদা গতি পেতে শুরু করেছে। ফলে গত মাসে দেশটির অর্থনীতিও ধীরে ধীরে করোনার ধাক্কা কাটিয়ে উত্তরণের পথে চলতে শুরু করেছে।
এক প্রতিবেদনে গোল্ডম্যান স্যাকসের অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, ‘স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জামের রফতানি বেড়ে যাওয়া চীনের বাণিজ্য উদ্বৃত্তের ঊর্ধ্বগামিতায় বিশেষ অবদান রেখেছে। মে মাসে বন্দর দিয়ে পণ্য সরবরাহ বেড়ে যাওয়া এটাই প্রমাণ করে যে চীনের অর্থনীতি আবার শক্ত অবস্থানের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।’
তবে হংকং ইস্যুতে ওয়াশিংটন ও বেইজিংয়ের মধ্যকার উত্তেজনা আরো বেড়ে যাওয়ায় চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যেও এর আঁচ লাগতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জিনপিং প্রশাসনের নিরাপত্তা আইনের জবাবে হংকংয়ের স্পেশাল ট্রেড স্ট্যাটাস প্রত্যাহারের প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে চীনও কম যায় না। তারা তাদের শীর্ষ রাষ্ট্রায়ত্ত কৃষিভিত্তিক কোম্পানিগুলোকে মার্কিন ফার্ম থেকে পণ্য কেনা বন্ধ রাখতে বলেছে। ওয়াকিবহাল সূত্র জানিয়েছে, হংকং ইস্যুতে ওয়াশিংটন কী প্রতিক্রিয়া দেখায়, তা খুব সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে বেইজিং।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গাও ফেং বলেছেন, ‘আমরা বরাবরই অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিষয়াবলির সঙ্গে রাজনীতিকে সম্পৃক্ত করার বিরোধিতা করে আসছি।’ চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের গতিপথ বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যা পরিস্থিতি, তাতে বেশকিছু প্রভাবক রয়েছে, যেগুলো একেবারেই অনিশ্চিত ও অস্থিতিশীল।’