একটা সমাজ কীভাবে যুগের পর যুগ টিকে থাকে? কীভাবে সমাজের ইতিহাস প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে পড়ে? প্রশ্ন দুটির খুব সহজ উত্তর হলো—শিল্প। একটি সমাজের শিল্প যত সমৃদ্ধ হয়, সেটাই তার ইতিহাসকে বয়ে নিয়ে চলে। আর এ শিল্পের মধ্যে অন্যতম একটি মাধ্যম হলো চিত্রশিল্প। রঙ, তুলি আর ক্যানভাসের ফ্রেমে ইতিহাস, সমাজ, জাতিকে উপস্থাপন করা সম্ভব।
তবে বর্তমান পৃথিবীতে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে শিল্পচর্চা অনেকটা ধীরগতিতে চলছে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলায় একটা প্রবাদ আছে—‘ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়’। করোনাভাইরাসে হয়তো পুরো পৃথিবী স্থবির। কিন্তু চাইলেই যে এমন পরিস্থিতিতেও শিল্পকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যায়, তার আরেকটি প্রমাণ ‘ইডিজিই—দ্য ফাউন্ডেশন’-এর করোনাকালীন চিত্রশিল্প প্রদর্শনীর উদ্যোগ।
সংগঠনটির ভাষ্যমতে, ‘শিল্পের গুরুত্ব তুলে ধরতে করোনাভাইরাসের এ কালের চেয়ে ভালো সময় আর হতে পারে না। শিল্প কোনো গল্পকথা নয়, বরং পৃথিবীর এ সমৃদ্ধ ইতিহাসেরও অনেক আগে থেকে শিল্প একটি অন্যতম উপাদান। শিল্প আসলে আমাদের অস্তিত্বের একদম কেন্দ্রস্থল।’
‘একটি সুন্দর পৃথিবী’—এমন বিষয়বস্তু আর চিন্তাধারা নিয়েই ‘ইডিজিই—দ্য ফাউন্ডেশন’ বিভিন্ন শিল্পীর সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। তারা করোনাকালীন বিভিন্ন শিল্পকর্ম প্রদর্শনের একটি উদ্যোগ নেয়। সেই উদ্যোগ বাস্তব হয়ে ওঠে ‘আর্ট ইন দ্য টাইম অব করোনাভাইরাস’ নামের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে। গত ১৫ মে শুরু হয়েছে অনলাইনে এ শিল্প প্রদর্শনী। এটি চলবে আগামী ৩১ জুলাই পর্যন্ত। সংগঠনটির ফেসবুক পেজে দেখা যাবে এ শিল্প প্রদর্শনী। যদিও প্রদর্শনী শুরুর আগেই ২০০টির বেশি শিল্পকর্ম এবং তার পেছনের গল্প জমা পড়েছে। তবে সংগঠনটি এ প্রদর্শনীর শেষ দিন পর্যন্ত এটি উন্মুক্ত রেখেছে। যে কেউ চাইলেই যেকোনো সময় জমা দিতে পারবেন তার শিল্পকর্ম এবং শিল্পকর্মটি তৈরির পেছনের গল্প।
করোনা মহামারীর কারণে বিগত কয়েক মাস দর্শকরা কোনো শিল্পকর্মের সামনে দাঁড়িয়ে সেটা নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ পাননি। এমনকি শিল্পকর্মের সঙ্গে সামনাসামনি দাঁড়িয়ে যোগাযোগের কোনো অবস্থা হয়নি। চিত্রশিল্পপ্রেমীরা সেই দুঃখ একটু হলেও ভুলতে পারবেন এমন উদ্যোগের মাধ্যমে।