এক কিশোরের ভুলে শহরজুড়ে ভাইরাস

গোপন জাদুবিদ্যার একটি সংগঠনের কিছু সদস্য শয়তানকে খুশি করতে সিলভিয়া নামক একটি মেয়েকে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করে। পরদিন সকালে সিলভিয়ার যখন জ্ঞান ফেরে তখন তার সারা শরীর রক্তাক্ত। মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তার ছোট ভাই পিট ও মিলড্রেড তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। কিশোর দুই ভাই সেই সংগঠনের সদস্যদের শায়েস্তা করতে গিয়ে ভুলক্রমে পুরো শহরে একটি ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়। ফলে সবাই রক্তপিপাসু হয়ে পড়ে।

এমন গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘আই ড্রিংক ইয়োর ব্লাড’ চলচ্চিত্রের কাহিনী। ১৯৭০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত হরর জনরার এ ছবিটি অতিমাত্রায় সহিংসতার জন্য বিখ্যাত। ছবিটির মূল কাহিনীতে দুজন কিশোর জড়িত থাকলেও সহিংসতার জন্য ছবিটি শিশু-কিশোরদের দেখার ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। ছবিটি যখন প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় তখন এর পোস্টারে এটিকে ‘আই ড্রিংক ইয়োর ব্লাড অ্যান্ড আই ইট ইয়োর স্কিন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

ছবির কাহিনীতে দেখা যায় সিলভিয়াকে উদ্ধার করে বাসায় নিয়ে আসার পর মিলড্রেড প্রথমে সিলভিয়ার প্রেমিক রজার ডেভিসের কাছে যায় এবং সাহায্যের জন্য বলে। কিন্তু রজার তেমন সাহায্য করতে পারে না। এরপর মিলড্রেড আর পিট মিলে প্ল্যান করে কীভাবে শায়েস্তা করবে যারা তাদের বোনের এ অবস্থা করেছে। দুজনের স্থানীয় বাজারে একটি বেকারির দোকান থাকায় সংগঠনের সদস্যদের ফ্রিতে একদিন কেক খাওয়ায়। যেন তাদের দুজনকে বিশ্বাস করতে শুরু করে তারা।

এরপর একদিন একটি শর্টগান নিয়ে সংগঠনের এক সদস্যকে খুন করতে যায় পিট। কিন্তু ভুলবশত গুলি করে ফেলে ভাইরাসে আক্রান্ত একটি কুকুরকে। এরপর প্রতিশোধ নিতে সেই কুকুরের রক্ত নিয়ে আসে পিট। ছোট কেকের মধ্যে সেই রক্ত মিশিয়ে তারা সেই সংগঠনের সদস্যদের খেতে দেয়। পরদিনই সবাই আক্রান্ত হয় এক অজানা রোগে। সবাই হঠাৎ করে রক্তপিপাসু হয়ে ওঠে। আস্তে আস্তে তা ছড়িয়ে পড়তে থাকে শহরের বিভিন্ন স্থানে।

এরপর পিট সিলভিয়ার কাছে সব খুলে বলে। পরে ব্যানার নামের একজনের সাহায্যে ডা. ওকসকে বিষয়টি জানানো হয়। কিন্তু ততক্ষণে পুরো শহরে ছড়িয়ে পড়েছে মহামারীটি। আক্রান্তরা জম্বিতে পরিণত হচ্ছে। শুধুই রক্তের নেশায় হত্যা করছে একের পর এক মানুষকে। এমনকি সিলভিয়ার প্রেমিক রজার ডেভিসসহ ওই সংগঠনের সবাই আক্রান্ত হয়ে গেছে। এরপর পিট আর সিলভিয়া শহর থেকেই পালানোর পরিকল্পনা করে। কিন্তু পরিকল্পনা হঠাৎই ভেস্তে যাওয়ার উপক্রম হয় যখন এক জম্বি তাদের আক্রমণ করে বসে।

৯০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এ ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৭০ সালের ১৫ ডিসেম্বর। ডেভিড ডার্সটনের পরিচালনা ও জেরি গ্রসের প্রযোজনায় ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন ভাস্কর রায় চৌধুরী, জেডিন অং, রোনডা ফ্লাটজ, জর্জ প্যাটারসন, রাইলি মিলস, জন ডেমন, এলিজাবেথ মার্নার ব্রুকস, রিচার্ড বোলার, টাইড কার্নি প্রমুখ। ছবিটি সমালোচকদের কাছ থেকে মিশ্র ও কিছুটা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে। তারা ভাস্কর রায় চৌধুরীর অভিনয়ের প্রশংসা করলেও প্রায় সবাই ছবিটির অতিরিক্ত সহিংস দৃশ্যের জন্য এর সমালোচনা করেছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *