আশায় বুক বেঁধেছেন মিরাজ-শান্তরা

মিরপুর শেরেবাংলা মাঠে ১ নম্বর গেট দিয়ে প্রবেশ করতে হয় সংবাদকর্মীদের। কাঁটাতার আর লোহার বেষ্টনীর বাইরে মাঠে তখন অনুশীলনে ব্যস্ত থাকেন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার। না, এক সঙ্গে নয়, সবাই বিচ্ছিন্নভাবে নিজেদের কাজ করে যান নীরবে। গতকালও এই চিত্র ভিন্ন ছিল না। তবে গোটা শেরেবাংলা স্টেডিয়াম ১৫ চক্কর দৌড়ে গতকাল মুশফিকুর রহীম বেশ আলোচনায়। অন্যদিকে ঢাকার বাইরে খুলনা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল স্টেডিয়ামেরও একই চিত্র। তবে ঈদের আগে আজই এই অনুশীলনের শেষ দিন। এরপর আবারো নতুন করে শুরু হবে অনুশীলন।
তখন বাড়বে ক্রিকেটারদের সংখ্যা। বর্তমানে প্রায় ফাঁকা মাঠে ক্রিকেটাররা বিসিবি’র ব্যবস্থাপনায় ব্যক্তিগত ভাবে ফিটনেস উন্নতির কাজ করে যাচ্ছেন। কেউবা দৌড়াচ্ছেন, আবার কেউ ব্যাট করছেন। মাঠে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তাদের আশাও। বিশেষ করে দুই তরুণ ক্রিকেটার ও মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠে শোনা গেল সেই আশার কথা। তারা বিশ্বাস করেন দ্রুতই মাঠে ফিরবে ক্রিকেট। খুলনা শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে অনুশীলনকালে মিরাজ বলেন, ‘অনেকদিন পর মাঠে এসে অনুশীলন করার সুযোগ পেয়েছি। আমি মনে করছি, বর্তমান যে কঠিন পরিস্থিতি চলছে তা দ্রুতই ঠিক হয়ে যাবে।’

প্রায় চার মাস ধরে ঘরে বসে আছেন ক্রিকেটাররা। তবে ফিটনেস নিয়ে কাজ করছেন। কিন্তু মাঠে এসে কাজ করার সঙ্গে সেটির পার্থক্য বিস্তর। এ বিষয়ে মিরাজ বলেন, ‘আমি বর্তমানে ফিটনেস নিয়ে কাজ করছি। গত চার মাসের মতো ঘরেই বসে ছিলাম, কোনো কিছু (অনুশীলন) করতে পারিনি। এখন ভালো একটা সুযোগ হয়েছে। ফলে যতোটা সম্ভব নিজের ফিটনেস ধরে রাখার চেষ্টা করছি। রানিং, জিম বা মাঠ যতটুকু সম্ভব ততটুকুই করছি। আর আশা করছি, তাড়াতাড়িই ক্রিকেটে ফিরবো এবং খুব তাড়াতাড়িই খেলাধুলা শুরু হয়ে যাবে।’

অন্যদিকে রাজশাহীতে অনুশীলন শুরু করেছে আরেক তরুণ ক্রিকেটার নাজমুল হোসেন শান্ত। সদ্য বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন এ ক্রিকেটার। তবে তার মাঠে ফেরার ব্যাকুলতা একটুও কমেনি। বরঞ্চ অনুশীলনের সময়টাকে দারুণ উপভোগ করছেন বলেই জানান তিনি। শান্ত বলেন, ‘অবশ্যই অনেক ভালো লাগছে এই জন্য যে, দীর্ঘদিন পর মাঠে এসে অনুশীলন করতে পারলাম। আগে কখনো এমন হয়নি যে, তিন বা চার মাস বাসায় বসে থেকেছি। এমন হয়নি বলে এই অভিজ্ঞতা একেবারেই নতুন। তাই এতদিন পর মাঠে এসে অনুশীলন করতে পেরে ভীষণ আনন্দ লাগছে।’
১৯শে জুলাই থেকে মিরপুর শেরেবাংলা সহ দেশের বেশ কয়েকটি স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত অনুশীলন। প্রথমে কয়েকজন ক্রিকেটার করোনার ভয় উড়িয়ে মাঠে নেমেছেন। তবে তাদের দেখাদেখি আরো বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার অনুশীলনে যোগ দেন। এর মধ্যে ঢাকায় তাসকিন আহমেদ ও মেহেদী হাসান রানা অন্যতম। তবে আজই এই অনুশীলন পর্ব থামছে। আরো ক্রিকেটার নিয়ে ঈদের পর শুরু হবে কার্যক্রম। বিসিবি’র সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি ভালো হলে হয়তো বিসিবিই ক্যাম্প আয়োজন করবে ক্রিকেটারদের নিয়ে। এ বিষয়ে অনুশীলনের দায়িত্বে থাকা বিসিবি’র ট্রেনার ইয়াকুব চৌধুরী ডালিম বলেন, ‘আজই শেষ হচ্ছে প্রথম পর্ব। ঈদের পর হয়তো আরো অনেক ক্রিকেটার আসবে। তবে তা নিয়ে আলোচনা এখনো হয়নি। বিসিবি যদি ক্যাম্প আয়োজন করে সেটি ভিন্ন বিষয়।’

যারা অনুশীলন শুরু করেছে তারা এখনো পুরোদমে ছন্দ খুঁজে পায়নি। তবে সবার চেয়ে ব্যতিক্রম মুশফিকুর রহীম। ফিটনেসে যে দারুণ উন্নতি করেছেন তার প্রমাণ রাখলেন শেরেবাংলা মাঠে টানা ১০ চক্কর দৌড়ে। এ অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের সঙ্গে অন্যদের পার্থক্য কি তা নিয়ে ট্রেনার বলেন, ‘আমি যতটা মনে করি মুশফিক করোনার সময়টা দারুণ ভাবে নিজেকে ধরে রেখেছে। তার সুযোগ-সুবিধাগুলো বেশি ছিল আর অভিজ্ঞতা তো আছেই। অন্যদের তুলনায় তিনি একটু এগিয়ে আছেন এই জন্য। তবে বাকিরা যে ভালো নেই তা কিন্তু নয়। একটু সময় লাগছে ফিটনেসটা ফিরে পেতে। কারণ মাঠ ও বাসাতো এক নয়। আমার মনে হয় কিছুদিনের মধ্যেই সবাই পুরো ছন্দ ফিরে পাবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *