নায়ক রাজ রাজ্জাক, সোহেল রানা, আলমগীর- ৭০ দশকে বাংলাদেশের সিনেমায় লাখো তরুণীর স্বপ্নের পুরুষ ছিলেন তারা। তখন নতুন কোনো অভিনেতার সিনেমায় এসে জায়গা পাওয়াটা ছিল স্বপ্নেরও অতীত। সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করেছিলেন চিত্রনায়ক উজ্জ্বল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় ছাত্র আশ্রাফ উদ্দিন আহমেদ শান্ত পরিচালক সুভাষ দত্তের হাত ধরে উজ্জল নামে অভিনয় করলেন ‘বিনিময়’ ছবিতে। সুভাষ দত্তের হাত ধরে যে ক’জন শিল্পী সিনেমায় নিজেদের সফলভাবে তুলে ধরেছিলেন তাদের মধ্যে উজ্জ্বল অন্যতম। বাংলা সিনেমায় ‘মেগাস্টার’ উপাধি অর্জন করেন তিনি। বর্তমানে তিনি জাসাসের সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। কেমন আছেন? এ নায়ক বলেন, আল্লাহ্ ভালোই রেখেছেন।
করোনাকালীন এই সময় যতটুকু পারি বাসায় থাকি। শরীর চর্চা করি। সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরনো সহকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। সবাই তো ব্যস্ত। তার মাঝেও আলমগীর, ফারুক, ববিতাদের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ-ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ রয়েছে। আপনার ছবির প্রথম নায়িকা কবরী। ‘বিনিময়’ ছবিতে আপনি তো একজন নতুন অভিনেতা- কেমন সহযোগিতা পেয়েছিলেন তার কাছ থেকে? এ চিত্রনায়ক বলেন, আল্লাহ্ কবরীকে জান্নাত নসিব করুন। আমি তো তখন কবরীর ভক্ত ছিলাম। কল্পনা করা যায় স্বপ্নের নায়িকার সঙ্গে বাস্তবে আমি নায়ক হয়েছি। ‘বিনিময়’- ছবিতে যারা অভিনয় করেছিলেন একমাত্র আমি ছাড়া সবাই ছিলেন প্রতিষ্ঠিত শিল্পী। সবাই সহযোগিতা করেছিলেন। কবরীর তো তুলনা হয় না। একজন নতুন অভিনেতাকে তিনি যে সহযোগিতা করেছিলেন আজও আমি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করি। শাবানা, ববিতা, রোজিনা, সুচরিতা, অঞ্জনা সবার সঙ্গেই আমি জুটি বেঁধে অভিনয় করেছি, সহযোগিতা পেয়েছি। আপনার নামের আগে মেগাস্টার বিশেষণটি কার দেয়া? উজ্জল বলেন, ‘উছিলা’ ছবির পরিচালক মরহুম মমতাজ আলী আমাকে এ সম্মানে ভূষিত করেছিলেন। ছবিটি ঐ সময় বাম্পার হিট হয়েছিল। আপনি অভিনেতা, প্রযোজক ও পরিচালক। এই তিন সত্তায় কোনটি বেশি আপনাকে সম্মানিত করেছে? ঝটপট উজ্জলের উত্তর, সবকিছুর সাফল্য ছাপিয়ে এগিয়ে রয়েছে চিত্রনায়ক উজ্জলের নাম। আজও দেশ-বিদেশে যেখানেই বাঙালি রয়েছেন তাদের সঙ্গে দেখা হলে সবাই নায়ক উজ্জলকেই দেখতে চান। আপনি কি মনে করেন বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার কমিটি বা বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি আপনাকে সঠিক মূল্যায়ন করেনি? এ নায়ক বলেন, শিল্পীরা পুরস্কারের জন্য অভিনয় করেন না। তারা সিনেমার চরিত্র পর্দায় সঠিকভাবে ফুটিয়ে তুলতেই পরিশ্রম করেন। অবশ্যই সবাই তার কাজের স্বীকৃতি প্রত্যাশা করেন। যে কোনো পুরস্কার শিল্পীর দায়িত্ব দ্বিগুণ বাড়িয়ে দেয়।