চলতি বছরের শুরু থেকে চায়ের বৈশ্বিক চাহিদা কমতির দিকে রয়েছে। কভিড-১৯ প্রাদুর্ভাবের জেরে বৈশ্বিক অর্থনীতির শ্লথগতি এক্ষেত্রে প্রধান প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। চাহিদা কমায় পানীয় পণ্যটির শীর্ষ রফতানিকারী দেশগুলো পড়েছে গভীর সংকটে। শ্রীলংকা থেকে গত কয়েক মাসে পণ্যটির রফতানি কমেছে রেকর্ড হারে। এ পরিস্থিতিতে ক্রেতা দেশগুলোকে আকৃষ্ট করতে আগামী ছয় মাসের জন্য চায়ের রফতানি শুল্ক স্থগিত করেছে দেশটি। খবর ইকোনমিনেক্সট।
শ্রীলংকার সরকারি সূত্র জানিয়েছে, দেশটি প্রতি কেজি চায়ের রফতানিতে ৩ দশমিক ৫০ রুপি (স্থানীয় মুদ্রা) কর আদায় করত, যা মূলত চা খাতের উন্নয়নের জন্য একটি তহবিল তৈরিতে ব্যবহার হতো। এমনকি দেশটির বিখ্যাত সিলন টিয়ের আন্তর্জাতিকভাবে প্রচারে তহবিলের এ অর্থ ব্যয়ের কথা রয়েছে। তবে নভেল করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে দেশটি থেকে চায়ের রফতানি উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। এ পরিস্থিতিতে রফতানিতে মন্দা কাটাতে আগামী ছয় মাসের জন্য চায়ের রফতানি শুল্ক না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।
সর্বশেষ এপ্রিলে দেশটিতে চায়ের দামে চাঙ্গা ভাব বজায় ছিল। এরপর থেকে পণ্যটির দাম ক্রমেই কমতির দিকে রয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা কমে যাওয়া এর প্রধান কারণ। তবে জুনের দ্বিতীয় নিলামে দেশটির চায়ের দামে মিশ্র ভাব দেখা গেছে। ১৬ ও ১৭ জুন অনুষ্ঠিত নিলামে অর্থডক্স চায়ের চাহিদা কমতির দিকে ছিল। তবে এ সময় এক্স-স্টেটের চাহিদা চাঙ্গা ছিল। এ সময় দেশটি ৬৭ লাখ কেজি সিলোন টি বিক্রি করেছে। নিলামে প্রতি কেজি চায়ের গড় দাম দাঁড়িয়েছে ৬৩২ দশমিক শূন্য ৪ রুপি বা ৩ ডলার ৪ সেন্ট।
এদিকে মে মাসে দেশটিতে চায়ের উৎপাদন আবার কমে ২ কোটি ৮৩ লাখ ৬০ হাজার কেজিতে নেমেছে। ২০১৯ সালের একই মাসে দেশটি উৎপাদন করেছিল মোট ৩ কোটি ৪২ লাখ ৫০ হাজার কেজি চা। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে পণ্যটির উৎপাদন কমেছে ৫৮ লাখ ৯০ হাজার কেজি।
উল্লেখ্য, শ্রীলংকার চা শিল্পের খ্যাতি বিশ্বজোড়া। দেশটি বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ চা রফতানিকারক ও চতুর্থ শীর্ষ উৎপাদনকারী দেশ। দেশটি থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রধানত প্যাকেটজাত, টি ব্যাগ ও বাল্ক টি—এ তিন ধরনের চা রফতানি হয়। দেশটি থেকে রফতানি হওয়া চায়ের প্রধান ক্রেতা ইরাক ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো। দেশটির বিখ্যাত সিলোন টির শীর্ষ রফতানি বাজার চীন। এর বাইরে রাশিয়া, তুরস্ক, ইরান, যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, যুক্তরাজ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পানীয় পণ্যটি রফতানি করে শ্রীলংকা।