২২ দিনেও অপসারণ হয়নি আশাশুনিতে ভেঙে পড়া ব্রিজ

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কামালকাটি এলাকায় শালখালী খালের ওপর নির্মিত ঢালাই ব্রিজটি ভেঙে পড়ে গত ১৮ জুলাই। কিন্তু ২২ দিন পেরিয়ে গেলেও ভেঙে পড়া অংশ সরিয়ে না নেয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চারটি ইউনিয়নের অন্তত ৫০ গ্রামের মানুষকে। জেলা ও উপজেলা সদরে যাতায়াতের ক্ষেত্রে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল কামালকাটির ওই ব্রিজ। কিন্তু ব্রিজটি ভেড়ে পড়ায় সাধারণ মানুষের চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে।

এদিকে ভেঙে পড়া ব্রিজটি অপসারণের বিষয়ে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য দিয়েছে এলজিইডি ও পাউবো। এলজিইডি বলছে, পানি উন্নয়ন বোর্ড কিছু না জানিয়ে ব্রিজটির দুপাশের খালের মাটি কেটে নেয়ায় ভেঙে পড়েছে। অন্যদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের বক্তব্য, তাদের (পাউবো) কাছ থেকে অনুমতি না নিয়ে খালের ওপর ঢালাই ব্রিজ নির্মাণ করে এলজিইডি। তাছাড়া ব্রিজের নিচে কোনো আরসিসি ঢালাই নেই। ফলে ফাউন্ডেশন না থাকায় ব্রিজটি দাঁড়াতে না পেরে ভেঙে পড়েছে।

শোভনালী ইউনিয়নের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম জানান, কামালকাটি ব্রিজটি ধসে পড়ায় এখন ৮-১০ কিলোমিটার ঘুরে বাড়ি যেতে হচ্ছে। অথচ ব্রিজটি ধসে পড়েছে গত ২২ দিন আগে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জনসাধারণের দুর্ভোগের বিষয়টিতে কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না। চলাচলের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় প্রতিদিন হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়ছেন।

আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মীর আলিফ রেজা জানান, জনসাধারণের চলাচলের বিকল্প একটি ব্যবস্থার জন্য উপজেলা প্রকৌশলীকে বলা হয়েছে। তাছাড়া ওই স্থানে দ্রুত নতুন ব্রিজ নির্মাণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে সয়েল টেস্ট করার জন্য পাঠানো হয়েছে।

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিভিশন-২-এর বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী মো. রাশেদুর রহমান কামালকাটি শালখালী খালের ওপর ব্রিজটি ধসে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলেন, ব্রিজের নিচে কোনো আরসিসি ঢালাই ছিল না। খালের চওড়া ৯০-১০০ ফুট সেখানে ব্রিজটি নির্মাণ করা হয় ১২-১৩ ফুট দৈর্ঘ্যের।

তিনি আরো বলেন, কামালকাটি এলাকার শালখালী খালের ওপর ঢালাই ব্রিজ নির্মাণের সময় এলজিইডি কর্তৃপক্ষ পানি উন্নয়ন বোর্ডকে কোনো কিছুই জানায়নি। তাছাড়া ব্রিজটি ধসে পড়ার পর আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখিছি, ব্রিজের নিচে কোনো আরসিসি ঢালাই নেই। ফাউন্ডেশন না থাকায় ব্রিজটি ভেঙে পড়েছে।

এ ব্যাপারে আশাশুনি উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী মো. আক্তার হোসেন জানান, কামালকাটি এলাকার ভেঙে যাওয়া ব্রিজটি নির্মাণ করা হয় ২০০১-০২ অর্থবছরে। কিন্তু সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড আমাদের কিছু না জানিয়ে ব্রিজটির দুপাশের খালের মাটি কেটে নেয়ায় ধসে পড়েছে। তার পরও দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরা স্থানীয় সরকার নির্বাহী প্রকৌশলী নারায়ণ চন্দ্র সরকার জানান, আশাশুনি উপজেলা প্রকৌশলীকে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তার পরও কেন বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হয়নি সেটি খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *