২০১৯ সালে ইইউতে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বেড়েছে ১১%

২০১৯ সালে ইউরোপে আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা ১১ শতাংশ বেড়ে ৭ লাখ ৩৮ হাজার ৪২৫ জনে দাঁড়িয়েছে। ২০১৫ সালের পর আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বাড়ল ইইউর দেশগুলোতে। ইউরোপিয়ান অ্যাসাইলাম সাপোর্ট অফিসের (ইএএসও) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর আনাদোলু।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত বার্ষিক ওই প্রতিবেদনে মাল্টাভিত্তিক সংস্থাটি জানায়, কভিড-১৯-এর প্রভাবে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আবেদন ৮৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। তবে ভ্রমণ ও নিরাপত্তা বিধিনিষেধ ধীরে ধীরে শিথিল হলে চলতি বছরের শেষের দিকে প্রবণতা ফের চাঙ্গা হবে।

প্রতিবেদনে জোর দিয়ে বলা হয়, সাইপ্রাস, ফ্রান্স, গ্রিস, মাল্টা ও স্পেনের মতো দেশগুলো ২০১৫ সালের অভিবাসন সংকটের চেয়েও বেশি আশ্রয়প্রার্থী গত বছর আবেদন করেছে।

বেশির ভাগ দেশই আশ্রয়প্রার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধির বিরুদ্ধে বিভিন্ন নতুন পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে মোকাবেলার চেষ্টা করেছে বলে জানায় ইএএসও।

সংস্থাটি বলছে, বেশির ভাগ দেশে প্রথম ধাপের প্রক্রিয়া শুরু হতে অনেক সময় লাগছে। কারো কারো ক্ষেত্রে প্রায়ই ছয় মাস সময় লেগে যাচ্ছে।

ইএএসও বলছে, ২০১৫ সালে যে ঝুলন্ত আবেদন ছিল তার তুলনায় ২০১৯ শেষে ওই আবেদনের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল। এতে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে আশ্রয়প্রার্থী ও তাদের গ্রহণ ব্যবস্থা কতটা চাপের মধ্যে রয়েছে।

তবে ২০২০ সালের শুরুতে কভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণে এ অচলাবস্থা প্রশমিত হয়।

মার্চের শেষ নাগাদ ৮ লাখ ৩৬ হাজার আবেদন ঝুলছিল, যা ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের তুলনায় ৮ শতাংশ কম।

২০১৯ সালে মোট আবেদনের অর্ধেকই গ্রহণ করেছে ফ্রান্স, জার্মানি ও স্পেন। ষষ্ঠ বছরের মতো সর্বোচ্চ আবেদন গ্রহণ করেছে জার্মানি যেখানে ১ লাখ ৬৬ হাজার আশ্রয়প্রার্থী আবেদন করেছে।

টানা দ্বিতীয় বছরের মতো সবচেয়ে কম আবেদন গ্রহণ করেছে ইতালি, যেখানে আবেদন করেছে ৪৪ হাজার আশ্রয়প্রার্থী।

পশ্চিম ও মধ্য ভূমধ্যসাগরীয় রুটগুলো হয়ে আশ্রয়প্রত্যাশীদের আগমন ২০১৮ সালের তুলনায় কম ছিল। অন্যদিকে পূর্ব ভূমধ্যসাগর ও পশ্চিম বলকান রুটগুলো দিয়ে আগমনের সংখ্যা বেড়েছে।

২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক সুরক্ষার জন্য যে দেশগুলো থেকে সর্বোচ্চ আবেদন এসেছে সেগুলো হচ্ছে আফগানিস্তান, ভেনিজুয়েলা, কলম্বিয়া, এল সালভাদর ও পেরু। আশ্রয়ের জন্য সর্বোচ্চ আবেদন করেছে সিরীয়, আফগান ও ভেনেজুয়েলানরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শরণার্থী সংখ্যায় বৈশ্বিক পর্যায়ে সিরিয়া থেকে সর্বোচ্চ ৬৬ লাখ শরণার্থী আবেদন করেছে, যা বৈশ্বিক শরণার্থীর এক-তৃতীয়াংশ। তার পরই রয়েছে আফগানিস্তান ও দক্ষিণ সুদান, যাদের শরণার্থীদের সংখ্যা যথাক্রমে ২৭ লাখ ও ২২ লাখ।

উপাত্তে দেখা গেছে, প্রতিবেশী দেশগুলো শুরুতে এ শরণার্থীদের ধাক্কা সয়ে থাকে। ২০১৯ সালে সর্বোচ্চ শরণার্থী গ্রহণ করেছে তুরস্ক। তার পরই রয়েছে পাকিস্তান, উগান্ডা, জার্মানি ও সুদান।

ইএএসও বলছে, ইউরোপীয় দেশগুলো অ-ইউরোপীয় দেশগুলো থেকে ৫০ হাজার অভিবাসী গ্রহণ লক্ষ্যমাত্রা পূরণে বেশ অগ্রগতি সাধন করেছে। ইইউ রিসেটলমেন্ট স্কিমের আওতায় গত বছর ৩০ হাজার ৭০০ জন এসেছে, ২০১৮ সালের তুলনায় যা ৮ শতাংশ বেশি।

উপাত্তে দেখা গেছে, চুক্তি স্বাক্ষরের আগের সময়ের তুলনায় তুরস্ক থেকে ইইউ দেশগুলোতে অনিয়মিত আগমনের সংখ্যা ৯৪ শতাংশ কমেছে। তুরস্ক থেকে মাত্র ২৭ হাজার সিরীয় শরণার্থী ইউরোপে পুনর্বাসিত হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *