সিরাজদিখানে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী ফুল

জাহাঙ্গীর চমক, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি : মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা ইউনিয়নের কুসুমপুর গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখী ফুল আবাদ করা হয়েছে। গ্রামের প্রায় এক একর জমিতে এ সূর্যমুখী আবাদ করেছেন সৈয়দ মাহমুদ হাসান মুকুট। উপজেলায় তিনিই প্রথম এ ফুল আবাদ করেছেন।

[৩] সূর্যমুখী ফুল থেকে তেল প্রস্তুত করা হয়, যা খাবার হিসেবে খেতে সুস্বাদু। সাধারণত: বছরের মার্চ মাসের শুরুতেই এ আবাদ করা হয়। তিন মাসের ব্যবধানেই এ সূর্যমুখী ফুল পরিপক্ক হয়ে উঠে। এরপর দানা সংগ্রহ করে তা থেকে তেল উৎপাদন করা হয়ে থাকে।

[৪] এদিকে, জুনের শুরুতে পরিপক্ক সূর্যমুখী ফুল থেকে দানা সংগ্রহ হয়েছে। তবে সূর্যমুখী ফুল আবাদের পর বিপত্তিতে পড়েতে হচ্ছে টিয়া পাখির উপদ্রবে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের কারণে আবাদ করা সূর্যমুখীর ক্ষতি সাধনের সঙ্গে টিয়া পাখির হানা পড়েছে।

[৫] দানা সংগ্রহের সময় প্রথমে ফুলগুলো রোদে শুকাতে হয়। পরে শুকনো ফুলের উপর লাঠির আঘাত করলেই দানা গুলো নীচে পড়ে যায়, এভাবেই সংগ্রহ করা হয়ে থাকে সূর্যমুখী ফুলের দানা। দানাগুলো সংরক্ষণ করা যায়। আর দানা থেকেই উৎপাদন হয়ে থাকে সূর্যমুখী তেল।

[৬] সূর্যমুখীর ভালো ফলন হওয়ায় হাসি ফুটে উঠেছে কুসুমপুর গ্রামের সৈয়দ মাহমুদ হাসান মুকুটের মুখে। টিয়া পাখিতে দানা খেয়ে ফেলছে-তাতে কোনো আক্ষেপ নেই তার।

তিনি জানান, নিজেই সূর্যমুখী তেল খেয়ে থাকেন। নিজের জন্য ছাড়াও ভবিষ্যতে এ তেল বাজারজাত করার পরিকল্পনা রয়েছে তার। চলতি বছর এক একর জমিতে সূর্যমুখী আবাদ করেছেন। আগামীতে তিন-চার একর জমিতে আবাদ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।

[৭] তিনি আরো জানান, এক একর জমিতে সূর্যমুখী আবাদে এ পর্যন্ত তার ২৪ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আরো ১০ হাজার টাকা খরচ হবে। তবে সূর্যমুখী তেল উৎপাদন করে কেমন লাভ হবে তা এখনও জানা নেই তার। দানা খেতে টিয়া পাখির ঝাক নেমেছে জমিতে। তবে তাতে কোনো আক্ষেপ নেই। মূলত: সূর্যমুখী আবাদ জনপ্রিয় করে তোলতেই শুরু করেছি। উপজেলার সর্বত্র বিস্তীর্ণ জমিতে আলু উৎপাদন করা হয়ে থাকে। আলু উত্তোলন শেষে মার্চ থেকে জুন পর্যন্ত অনেক কৃষকের জমিই ফাঁকা পড়ে থাকে। এতে এ সময়ের মধ্যে যে কেউ সূর্যমুখী আবাদ করতে পারেন কৃষককুল।

[৮] উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, এ উপজেলায় একমাত্র কৃষক সূর্যমুখী চাষ করেছেন। ঘূর্ণিঝড়ে ও টিয়া পাখির ঝাঁক এসে সূর্যমুখীর দানা খেয়ে সামান্য বিনষ্ট হয়েছে। তবে ওই একমাত্র কৃষকের পাশাপাশি উপজেলায় আরো উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সূর্যমুখী আবাদ করলে টিয়া পাখির উপদ্রব কমবে। এ বছর সূর্যমুখীর ফলন ভালো হয়েছে। মার্চের প্রথম দিকে সূর্যমুখীর আবাদ করা হয়ে থাকে। জুন মাসেই সূর্যমুখীর দানা সংগ্রহ করে থাকে চাষীরা।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *