সিক্সজি উন্নয়ন জোটে অ্যাপল

মার্কিন প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরবর্তী ‘জি’ অ্যালায়েন্সে যোগদান করেছে। জি অ্যালায়েন্স হলো প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি জোট, যা ষষ্ঠ প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি সিক্সজির সংজ্ঞায়ন এবং উন্নয়নে কাজ করছে। দ্য অ্যালায়েন্স ফর টেলিকমিউনিকেশনস ইন্ডাস্ট্রি সলিউশনসের (এটিআইএস) এক ঘোষণায় এ তথ্য জানানো হয়েছে। খবর ইন্দো-এশিয়ান নিউজ সার্ভিস।

যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার শীর্ষস্থানীয় অপারেটরগুলো নিয়ে গত মাসে সিক্সজি অ্যালায়েন্স গঠন করেছিল এটিআইএস। এর মধ্যে রয়েছে এরিকসন এবং নকিয়ার মতো নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম ও টেলিকম গিয়ার নির্মাতা একাধিক প্রতিষ্ঠান। বলা হচ্ছে, ষষ্ঠ প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি সিক্সজি উন্নয়নে উত্তর আমেরিকাকে শীর্ষস্থানে বসানো এ জোটের প্রধান লক্ষ্য।

এটিআইএসের বিবৃতিতে বলা হয়, সিক্সজি মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি খাতে উত্তর আমেরিকার উদ্ভাবনের একটি প্রাণবন্ত বাজারের ভিত্তি স্থাপন করতে প্রাথমিক লক্ষ্যের ওপর নির্ভর করে নেক্সট জি অ্যালায়েন্স নাম দেয়া হয়েছে। এর ফলে উত্তর আমেরিকাকে ফাইভজিতে বিবর্তনমূলক অবস্থানে আনা সম্ভব হবে এবং সিক্সজির উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা সম্ভব হবে।

পরবর্তী জি অ্যালায়েন্সের ১১ সদস্য চার্টার, সিসকো, গুগল, এইচপি, ইন্টেল, কিসাইট টেকনোলজিস, এলজি, ম্যাভেনির, এমআইটিআরই এবং ভিএমওয়্যারের সঙ্গে এবার যোগ দিয়েছে প্রযুক্তি কোম্পানি অ্যাপল। জোটের সদস্যদের ভাষ্যে, সিক্সজি বিষয়ে গবেষণা এবং উন্নয়ন, উৎপাদন, মান নির্ধারণ এবং বাজার প্রস্তুতের পুরো সময় তারা একসঙ্গে কাজ করবে। প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা এবং কৌশল ঠিক করতে গতকালই সদস্যদের নিয়ে প্রথম বৈঠকের কথা রয়েছে নেক্সট জি অ্যালায়েন্সের। তবে এ প্রতিবেদন লেখা অবধি এ বিষয়ে কোনো হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায়নি।

বিশ্বের অনেকেই এখন ফাইভজির সম্ভাবনা সম্পর্কে কিছুটা জানেন। পঞ্চম প্রজন্মের মোবাইল নেটওয়ার্ক ফাইভজি মাত্র কয়েকটি দেশে চালু হয়েছে। তবে এর মধ্যেই সিক্সজি নিয়ে কার্যক্রম শুরু করেছে অনেক দেশ।

সম্প্রতি জাপানের সংবাদ মাধ্যম নিক্কেই জানিয়েছে, ২০৩০ সালে সিক্সজি চালু করতে চায় জাপান সরকার। সরকারি অর্থায়নে সিক্সজির উন্নয়ন নিয়ে কাজ করছে দেশটির মোবাইল অপারেটর এনটিটি ডোকোমো ও প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তোশিবা। আগামী জুনের মধ্যে তারা সিক্সজির পারফরম্যান্স গোল ও পলিসি সমর্থন নিয়ে রিপোর্ট জমা দেবে। সিক্সজির প্রচারণাতেও ব্যয় হবে সরকারি অর্থ।

জাপানের ইন্টারনাল অ্যাফেয়ার্স ও কমিউনিকেশনস মন্ত্রণালয়ের আশা, ফাইভজির চেয়ে সিক্সজির গতি হবে ১০ গুণ বেশি। শুধু জাপান নয়, সিক্সজি নিয়ে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও ফিনল্যান্ডও গবেষণা শুরু করেছে। কমিউনিকেশন স্ট্যান্ডার্ড সম্পর্কিত কোনো কিছুর পেটেন্ট থাকলে ভবিষ্যতে যন্ত্রাংশ ও সফটওয়্যার বিক্রি করে বিশাল অংকের অর্থ আয় সম্ভব। ফাইভজি নিয়ে জাপান খুব বেশি তত্পর ছিল না। তাই চীন বা দক্ষিণ কোরিয়ার তুলনায় দেশটিতে ফাইভজির বিস্তার হচ্ছে খুব ধীরগতিতে। ফলে সিক্সজির জন্য তারা আগেভাগেই প্রস্তুতি নেয়া শুরু করেছে।

চীনা সরকার ২০১৯ সালের এক ঘোষণায় জানায়, সিক্সজির জন্য দুটি রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট সেন্টার স্থাপন করা হবে। ফিনল্যান্ডের রিসার্চ ও ডেভেলপমেন্ট প্রকল্প চালুর ঘোষণা দিয়েছে। বাদ নেই দক্ষিণ কোরিয়াও। গত বছর স্যামসাং ও এলজি আলাদাভাবে দুটি রিসার্চ সেন্টার খোলে। সিক্সজি বিস্তারে অব্যবহূত হাই ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও ওয়েভ ব্যবহার করা হবে। সিক্সজি চালু হলে কী কী সুবিধা পাওয়া যাবে তা এখনই ধারণা করা সম্ভব হচ্ছে না।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *