সাকিব আল হাসান টেস্ট খেলতে চান না, এ নিয়ে অভিযোগের শেষ নেই। পেসার মোস্তাফিজুর রহমানও তো সাদা পোশাকে খুব আগ্রহী নন! সীমিত ওভারের ক্রিকেটকে বেশি জোর দেন তিনি। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাংলাদেশ দল যখন টেস্টে লড়াই করেছে, মোস্তাফিজ তখন আইপিএল প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। সাদা বলে তার গুরুত্ব দেয়ার কারণ কি?
২০১৫’র জুনে ওয়ানডে অভিষেক হয় ‘কাটার মাস্টার’ খ্যাত মোস্তাফিজের। পরের মাসেই মাথায় পরেন টেস্টের ক্যাপ। তবে গত ৭ বছরে মাত্র ১৪টি ম্যাচ খেলেছেন এই বাঁহাতি পেসার। সর্বশেষ টেস্ট খেলেন গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে চট্টগ্রামে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। টেস্টে অনিয়মিত ফিজকে তাই লাল বলের চুক্তিতেই রাখেনি বিসিবি।
সম্প্রতি মুঠোফোনে দেশের শীর্ষ গণমাধ্যম ‘আজকের পত্রিকা’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে টেস্ট থেকে দূরে থাকার মূল কারণ জানান মোস্তাফিজ। তিনি বলেন, ‘সুস্থ থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি যদি লম্বা সময় বাংলাদেশ দলকে সার্ভিস দিতে চাই, তাহলে আমার ফিট থাকা জরুরি। আর ফিট থাকতে হলে তিন সংস্করণের মধ্যে বেছে খেলাটাই সেরা উপায় মনে করি। এ ক্ষেত্রে কোন বলে আমার সাফল্য তুলনামূলক বেশি, সেটা দেখে সংস্করণ বাছাই করছি। রেকর্ড বলে, আমার সাফল্য বেশি ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টিতে। সে হিসেবে এই দুই সংস্করণে বেশি মনোযোগ দিচ্ছি। আর বিশ্ব ক্রিকেটের অনেককেই দেখুন, ক্যারিয়ার লম্বা করতে সংস্করণ বেছে খেলছে। কোনো নির্দিষ্ট খেলোয়াড়ের ওপর নির্ভর করে কোনো দলও হয় না।’ দেশসেরা পেসার হওয়ায় মোস্তাফিজের ওপর বাংলাদেশ দল অনেকাংশেই নির্ভরশীল। তবে মোস্তাফিজ মনে করেন, এ নির্ভরতা কমানো সম্ভব। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মতো দলগুলো টেস্টের জন্য আলাদা স্পেশালিস্ট বোলার তৈরি করেছে। মোস্তাফিজ বলেন, ‘আমি থাকলেই পেস বোলিং ইউনিট অনেক শক্তিশালী হবে, এভাবে না ভেবে যদি এভাবে ভাবা যায়, সাদা ও লাল বলে আমাদের দুটো শক্তিশালী পেস বোলিং গ্রুপ থাকবে। এতে বোলারদের কাজের চাপে (ওয়ার্ক লোড) যেমন ভারসাম্য আসবে, পেসাররাও ধারাবাহিক ভালো করবে। জিম্বাবুয়ে-আয়ারল্যান্ডের মতো দলের বিপক্ষে নতুনদের সুযোগ দিয়ে তাদের সামর্থ্য দেখা যেতে পারে। বেশি বেশি সুযোগ না দিলে একজন নতুন বোলার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে কীভাবে প্রতিষ্ঠা করবে? সে কি শুধুই ঘরোয়া ক্রিকেট খেলবে?’
বিশ্বের অনেক ক্রিকেটারই জাতীয় দল ছেড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে মনোযোগী হয়েছেন। বাংলাদেশের বিপক্ষেই যেমন ঘরের মাঠে রাবাদা-এনগিডিরা টেস্ট খেলেননি। তারা আইপিএলকে গুরুত্ব দিয়েছেন। মোস্তাফিজের কাছে আইপিএল বড় আসর হতে পারে, তবে জাতীয় দলের চেয়ে বড় নয়। তিনি বলেন, ‘আইপিএলে প্রতিটি দলই হয় খুব শক্তিশালী।
একটা দলের ১১ জন খেলোয়াড়ই বিশ্বমানের। তাদের বিপক্ষে খেলে কিছু না কিছু ধারণা আসবে, কিছু না কিছু শেখা হবে। আপনি বিশ্বমানের খেলোয়াড়, কোচিং স্টাফের সঙ্গে ড্রেসিংরুম ভাগাভাগি করছেন। সেখানে খেলছেন। সব মিলিয়ে আপনার একটা ভিন্ন অভিজ্ঞতা হচ্ছে। তবে হ্যাঁ, আইপিএল কখনো জাতীয় দলের চেয়ে বড় নয়। ২০২০ আইপিএলে সুযোগ পেয়েও কিন্তু খেলিনি। তখন আমাদের সামনে শ্রীলঙ্কা সফর ছিল (সফরটা তখন আর হয়নি, হয়েছে গত বছর এপ্রিলে)। সব সময়ই জাতীয় দলকেই প্রাধান্য দিয়েছি।’