সবার জন্য সাশ্রয়ী ও অভিগম্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দাবি

‘বিশ্ব নগর পরিকল্পনা দিবস-২০২০’ উপলক্ষে গতকাল বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) আয়োজিত ‘জনস্বাস্থ্যের জন্য নগর পরিকল্পনা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে জনস্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নগর পরিকল্পনায় কিছু বিষয়ের ওপর প্রাধিকার দেয়ার কথা বলা হয়। যেমন সবার জন্য সাশ্রয়ী ও অভিগম্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা ও জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় সামাজিক বৈষম্য দূর করা, এলাকাভিত্তিক খেলার মাঠ, পার্ক, জলাশয়, উদ্যানের ব্যবস্থা এবং সেখানে সবার প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা।

সেমিনারে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বলেছেন, আমাদের বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ গড়তে হবে। শিল্পায়নে এবং অধিক জনসংখ্যার ফলে ব্যবহারযোগ্য জমির পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে কিন্তু আমরা একটি স্বাস্থ্যসম্মত দেশ প্রত্যাশা করি। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং পরিকল্পিত বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসম্মত দেশ নিশ্চিত করতে হবে।

বিআইপি সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী প্রতিমন্ত্রী।

সেমিনারে স্বাগত বক্তব্যে বিআইপির ভাইস প্রেসিডেন্ট পরিকল্পনাবিদ মুহাম্মদ আরিফুল ইসলাম বলেন, সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং তার যথাযথ বাস্তবায়নের মাধ্যমে নগরে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা সম্ভব। সুষ্ঠু পরিকল্পনার আওতায় অবকাঠামোগত উন্নয়নের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য নিশ্চিতকল্পে নগরের প্রতিটি ওয়ার্ডে পার্ক, খেলার মাঠ, জলাধারসহ উন্মুক্ত স্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। পরিকল্পিত বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে এবং দেশবাসীকে পরিকল্পনার উপকারিতা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে।

বিআইপির উপদেষ্টা পরিষদের আহ্বায়ক পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. একেএম আবুল কালাম বলেন, নগরকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জনস্বাস্থ্য সম্পর্কিত। তাই নগরকেন্দ্রিক কর্মকাণ্ডে নগর পরিকল্পনাকে গুরুত্ব না দিলে জনস্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন না করলে মানববসতির নানা সমস্যা, স্বাস্থ্যঝুঁকি, পরিবেশগত ঝুঁকি থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।

মো. লিয়াকত আলী বস্তির সঙ্গে জনস্বাস্থ্য সমন্বয় বিষয়ে বলেন, বস্তিতে যারা বসবাস করে তাদের কথা মাথায় রেখে জনসাধারণ কেন্দ্রিক পরিকল্পনা করতে হবে। কভিড মহামারীর ফলে নতুন বর্জ্য যুক্ত হয়েছে, যার সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে হবে এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনার মাধ্যমে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইপি সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের মধ্যে অন্যতম জনবহুল ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। উচ্চ নগরায়ণের প্রভাবে আমাদের শহরগুলো ক্রমে বাসযোগ্যতা হারাচ্ছে। দ্রুত নগরায়ণের ফলে যানজট, জলাবদ্ধতা, পরিবেশ দূষণ যথা বায়ু, পানি, শিল্প ও শব্দ দূষণ, বর্জ্যের অব্যবস্থাপনা, সবুজায়ন হ্রাস পাওয়া, প্রাকৃতিক জলাধারের দখল-দূষণ এবং নগর এলাকার তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে সংক্রামক-অসংক্রামক সব ধরনের রোগ দিন দিন বাড়ছে এবং একই সঙ্গে নগরজীবনের চাপ, উদ্বেগ প্রভৃতির সামষ্টিক প্রভাবের ফলে মানুষের শারীরিক ও মানসিক উভয় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *