নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে বৈশ্বিক পুঁজিবাজার। কয়েক মাস ধরে পুঁজিবাজার খুব বেশি উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে সময় পার করেছে। মাঝের কিছু সময় যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশের অর্থনীতি খুলে দেয়ার উদ্যোগে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে। তবে কভিড-১৯-এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের শঙ্কায় সেটিতেও ধস নামে। যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশেই নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে গতকাল নতুন করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বৈশ্বিক বাজার। আবারো ইতিবাচক ধারা ফিরেছে বাজারে। এর মধ্যে ইউরোপীয় শেয়ারবাজারের সূচক দ্বিতীয় দিনের মতো উল্লম্ফন হয়েছে। খবর রয়টার্স
কভিড-১৯ সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে যুক্তরাষ্ট্রে। এখন পর্যন্ত সংক্রমিত ও মৃত্যুতে শীর্ষে রয়েছে দেশটি। নতুন করে দেশটিতে সংক্রমিতের সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছে। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার এ-যাবত্কালের মধ্যে একদিনে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে, ৩৯ হাজার ৮১৮ জন। সংক্রমিত ও হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা বৃদ্ধির ফলে টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের গভর্নর এদিন থেকে সাময়িকভাবে আবারো সবকিছু বন্ধ করে দিয়েছেন।
তবে বিশ্বের শীর্ষ অর্থনীতির দেশটিতে এমন সংকটময় পরিস্থিতি পরাহত করতে পারেনি ইউরোপীয় পুঁজিবাজারকে। ইউরোপীয় পুঁজিবাজারের সূচক স্টকস ৬০০ গতকাল নতুন করে ঘুরে দাঁড়ায়। চলতি মাসের শুরুতে হওয়া ক্ষত কিছুটা কাটিয়ে উঠে এদিন সূচকটি ১ দশমিক ২ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায়। সূচকটি দশমিক ৫ শতাংশ কমে সাপ্তাহিক দিন শেষ করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেটি হলে এটা হবে গত পাঁচ মাসের মধ্যে সবচেয়ে সর্বনিম্ন সাপ্তাহিক সূচকের পরিবর্তন। লন্ডনের এফটিএসই ১০০ সূচকও এদিন প্রায় ১ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
অন্যদিকে বৈশ্বিক ইকুইটি সূচক এমএসসিআই গত বৃহস্পতিবারের তুলনায় দশমিক ৪ শতাংশ বেড়েছে। আর এসঅ্যান্ডপি ৫০০ ফিউচার্স সূচক ১ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। আর বন্ডবাজারের মধ্যে জার্মানির ১০ বছর মেয়াদি বন্ড ইল্ড সম্প্রতি দশমিক ৪৬৪ শতাংশ কমে যাওয়ার পর গতকাল নতুন করে আবার কিছু বেড়েছে।
স্টেট স্ট্রিট গ্লোবাল মার্কেটসের হেড অব ম্যাক্রো স্ট্র্যাটেজি ফর ইএমইএ টিমোথি গ্রেফ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে মরণঘাতী ভাইরাসটির সংক্রমণ বাড়লেও সেটি আর বাজার সেন্টিমেন্টকে তেমন প্রভাবিত করছে না। সম্প্রতি পুঁজিবাজারে ঘুরে দাঁড়ানো প্রবণতার মধ্যে এটি তেমন প্রভাব ফেলতে পারছে না বলেও মনে করেন তিনি।
তিনি আরো বলেন, নভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ এবং নতুন করে লকডাউন জারি করা হলেও এটি পুঁজিবাজারের ওপর খুবই কমই প্রভাব ফেলছে। যদি লকডাউন আরো দীর্ঘায়িত হয়, এর পরও পুুঁজিবাজারে উল্লম্ফন ভাব বজায় থাকবে।