‘শিখন দক্ষতা’ নিয়েই পরবর্তী ক্লাসে পা দেবে প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা

করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে বিঘ্ন ঘটায় সংক্ষিপ্ত সিলেবাস বা অর্ধেক নম্বরের পরীক্ষা নিয়ে মূল্যায়নের প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পরবর্তী ক্লাসে ওঠার জন্য একজন শিক্ষার্থীর যে দক্ষতা প্রয়োজন সেটি তাকে অর্জন করতে হবে। করোনার ছুটির আগে বছরের আড়াই মাস ক্লাস, ছুটির মধ্যে টিভি, রেডিও, শিক্ষকদের মোবাইলে কলের মাধ্যমে তারা যতটুকু শিখতে পেরেছে তা সংকটের মধ্যে কাজে লাগবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল-হোসেন মঙ্গলবার (১৮ আগস্ট) জানিয়েছেন, বিকল্প বিভিন্ন প্রস্তাবনা দিয়ে সারসংক্ষেপ তৈরি করা হয়েছে। এক-দুই দিনের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে।

করোনা সংক্রমণ এড়াতে ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে সরকার।

শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে সচিব আকরাম-আল-হোসেন বলেন, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সরকার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

তবে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে তা নিয়ে সিদ্ধান্ত না এলেও করোনা পরিস্থিতির উন্নতির পর যদি খুলতে হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব বিবোচনায় রাখা হবে। এজন্য ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে বিদ্যালয় পুনরায় চালু করার নির্দেশিকা’ (প্রস্তাবিত নাম) তৈরি করছে মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়টি নিশ্চিত করে সিনিয়র সচিব আকরাম বলেন, আমরা সবদিক থেকে প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি।

এ বিষয়ে বিস্তারিত বলেননি আকরাম-আল-হোসেন। তবে গত ১২ আগস্ট প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন জানান, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা আছেই।

সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণ বা কেন্দ্রীয় পরীক্ষা না নিয়ে বিদ্যালয়েই গ্রহণ বা ৫০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষা নেওয়ার বিকল্পের কথা জানিয়েছিলেন জাকির হোসেন।

প্রতিমন্ত্রী জানান, অক্টোবর-নভেম্বরের দিকে খুললে আমরা একটা মূল্যায়নের ভিত্তিতে স্কুলে স্কুলে পরীক্ষা নেয়ার চিন্তা-ভাবনা করছি। তবে নভেম্বরে না খুললে তখন বিকল্প ব্যবস্থা নেব। তবে সেই বিকল্প ব্যবস্থার কথা জানাননি প্রতিমন্ত্রী।

কিন্তু সমাপনী পরীক্ষার বদলে অটো পাসের চিন্তা-ভাবনার কথা শোনা যাচ্ছে। সেটি অটো পাস কিনা, জানতে চাইলে তা প্রতিমন্ত্রী নাকচ করে দিয়েছেন ওই দিন।

মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয় শাখার অতিরিক্ত সচিব আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম মঙ্গলবার বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, আমরা মার্চ পর্যন্ত ৩৫ শতাংশ ক্লাস নিতে পেরেছি। বাকি সময়ে সংসদ টিভি, বেতার, অনলাইনের বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম এবং শিক্ষকরা মোবাইল ফোনে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সমাধান করে দিচ্ছেন। কোনো জেলায় শিক্ষার্থীরা জুমে অংশ নিয়ে ক্লাস করছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, টেলিভিশনে ৪০ শতাংশের মতো ক্লাসের আওতায় এলেও বেতারে ৯০ শতাংশের বেশি অংশগ্রহণ করছে। আর মোবাইল ফোনেও শিক্ষকদের কাছে শিক্ষার্থীরা শিক্ষা নিচ্ছেন। সবমিলে প্রায় ৯৫ ভাগ শিক্ষার্থী পাঠদান পাচ্ছে।

অতিরিক্ত সচিব আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে প্রচলিত পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে না পারলেও কোনোভাবে পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবো।

‘পরবর্তী ক্লাসে উঠতে কমপিটিন্সি বা শিখন দক্ষতা অর্জন করতে হবে, আমরা এ বিষয়টি মাথায় রেখে তাদের মৌখিক পরীক্ষা বা অন্য কোনোভাবে মূল্যায়ন করবো। ‘

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *