শরিফুলের টেস্ট ‘উত্তেজনা’

২১ সদস্যের দল নিয়ে শ্রীলঙ্কায় টেস্ট সফরে গেছে বাংলাদেশ। সেখান থেকে ১৫ জনকে নিয়ে ক্যান্ডিতে সিরিজের প্রথম ম্যাচের জন্য দল ঘোষণা করেন নির্বাচকরা। সেই দল গেল দুই বছর টানা হারে বিপর্যয় কাটিয়ে দারুণ শুরু এনে দিয়েছে। ৫ দিন লড়াই শেষে ম্যাচ হয়েছে ‘ড্র’। এমন একটি ম্যাচ একাদশের বাইরে বসে দেখেছেন তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ী দলের এই সদস্য তাতেই ভীষণ উত্তেজিত। কারণ এত কাছ থেকে টেস্ট দেখা হয়নি তার। এই ম্যাচই তাকে অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে মাঠে সাদা পোশাকে দারুণ কিছু করার অনুপ্রেরণা।
শ্রীলঙ্কা থেকে ভিডিও বার্তাতে তিনি বলেন, ‘প্রথমবারের মতো চতুর্দশ ব্যক্তি ছিলাম আর এত কাছ থেকে টেস্ট ক্রিকেট আমি কখনো দেখি নাই। তো আমার জন্য একটু এক্সাইটিং ছিল। টেস্ট খেলাটা আসলে মজার খেলা। প্রতি সেশনে সেশনে মুভমেন্ট চেঞ্জ হয়। একেক রকম মেসেজ পাঠানো হয়। তো আমি খুব এক্সাইটেড ছিলাম। মনে হয় নাই যে, আমি ম্যাচের বাইরে আছি। মনে হয়েছে আমি ম্যাচের মধ্যেই আছি’। অন্যদিকে কাল থেকে একই মাঠে শুরু হবে দ্বিতীয় টেস্ট। তবে যতটা জানা গেছে, এই ম্যাচ শরিফুলকে দেখতে হবে ড্রেসিংরুমে বসে।
আন্তর্জাতিক টেস্টে মাঠে খেলার সুযোগ না হলেও তরুণ শরিফুল দারুণ উপভোগ করেছেন এর উত্তেজনা। বুঝতে পেরেছেন কতোটা কষ্ট পাঁচ দিনের প্রতিটি সেশনের লড়াইয়ে। বিশেষ করে শ্রীলঙ্কার মতো গরম কন্ডিশনে। তিনি বলেন, ‘আসলে টেস্ট খেলাটা একটু হার্ড। যে ওয়েদারে খেলা হচ্ছে অনেক রোদ ছিল। পেস বোলারদের একটু পরপর পানি খাওয়ানো, তাদের সঙ্গে কথা বলা, তাদের কাছ থেকে কিছু জানা। সবমিলিয়ে মনে হচ্ছিল যেমন মজার আছে, তেমন ওদের কষ্টও আছে। এটা আসলে খেলার পার্ট। এটা আমাদের হাতে নেই। এটা জয় করেই আমাদের ভালো কিছু করতে হবে।’ তবে কন্ডিশন যতই যা থাক ক্যান্ডির প্রথম ম্যাচের টেস্ট উইকেট ছিল ব্যাটসম্যানদের স্বর্গ। টসে জিতে বাংলাদেশ দল ব্যাট করেছে আড়াই দিন। স্কোর বোর্ডে তুলেছে ৭ উইকেট হারিয়ে ৫৪১ রান। জবাবে প্রায় আড়াই দিন ব্যাট করে ৬৪৮ রান করেছে স্বাগতিকরা। দলের হয়ে মুমিনুল শান্ত সেঞ্চুরি করেছেন। তামিম দুই ইনিংসে ফিফটি হাঁকিয়েছেন। তবে শরিফুলের কাছে ভালো লাগে মুশফিকের ব্যাটিং। এর কারণও আছে, তিনি বলেন, ‘ব্যাটসম্যানদের মধ্যে আমার সবচেয়ে ভালো লাগে মুশফিক ভাইয়ের ব্যাটিং। তাকে এখনো আমি আউট করতে পারি নাই। যেকোনো খেলায় তার উইকেট নেয়া আমার একটা ইচ্ছা। মুশফিক ভাই আর তামিম ভাইয়ের ব্যাটিং ভালো লাগে। আমি আগে দেখতাম তাদের খেলা। এখন তাদের সঙ্গে খেলছি, তাদেরকে বল করছি- এটা ভালো লাগছে। তাদের সঙ্গে ভালোই ফাইট হচ্ছে নেটের ভেতরে।’

কিন্তু ব্যাটিং স্বর্গ থাকায় বোলারদের দিতে হয়েছে অগ্নিপরীক্ষা। বিশেষ করে তিন পেসার তাসকিন আহমেদ, ইবাদত হোসেন ও আবু জায়েদ রাহীদের ঘাম ঝরাতে হয়েছে লঙ্কান ব্যাটসম্যানদের রুখতে। এর মধ্যে ৩ উইকেট নিয়ে সফল তাসকিন। রাহীরাও দারুণ বল করেছেন। কিন্তু উইকেট পাননি। তরুণ পেসার শরিফুলের জন্য তারাও ছিলেন বড় অনুপ্রেরণা। তিনি বলেন, ‘তাসকিন ভাই অনেক লং স্পেল করছে, অনেক ওভার করছে। তাসকিন ভাই, এবাদত ভাই, রাহী ভাই। তাসকিন ভাই আর এবাদত ভাই অনেক জোরে বোলিং করছে। সেটা দেখে অনেক ভালো লাগছে যে, এত গরমে ফার্স্ট টু লাস্ট একই পেস দিয়ে জোরে বল করা। টেস্ট খেলাটা এমনই যে নিজের হান্ড্রেড পারসেন্টটা দিতে হয়। তারা চেষ্টা করছেন হান্ড্রেড পারসেন্ট দেয়ার। যদি আমি কখনো সুযোগ পাই, আমিও চেষ্টা করবো হান্ড্রেড পারসেন্ট দেয়ার ইনশাআল্লাহ।’ অন্যদিকে তিন ফরম্যাটে খেলার ইচ্ছা নিয়ে ক্রিকেট শুরু করা শরিফুল মুখিয়ে আছে টেস্ট খেলার জন্য। জানিয়েছেন সুযোগ পেলেই দিবেন নিজের সেরাটা।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *