ইতিহাসে প্রথমবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জয় নিশ্চিত। এবার আত্মবিশাসী টাইগারদের আরেকটি রেকর্ডের হাতছানি। ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচ জিতলেই লঙ্কারদের হোয়াইটওয়াশের সুযোগ। এই সিরিজের আগে বাংলাদেশ দল ক্রিকেটের তিন ফরমেটে ১০ ম্যাচে ছিল জয়হীন। যার ৯টিতেই হার। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে টাইগাররা। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নিজেদের মাঠে সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ । সেই সঙ্গে আইসিসির ওয়ানডে বিশ্বকাপ সুপার লীগেও নিজেদের অবস্থা করেছে মজবুত।
এখন পর্যন্ত তিন দলের বিপক্ষে ৮ ম্যাচে ৫টিতে অর্জন ৫০ পয়েন্ট। সেই সঙ্গে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান ও অস্ট্রেলিয়াকে পেছনে ফেলে অবস্থান করছে সুপার লীগের পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে। শুক্রবার সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে জিতলে এই ব্যবধান যেমন বাড়বে তেমনি সুযোগ থাকবে ভারতে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের মূল পর্বে সরাসরি খেলার। লঙ্কার বিপক্ষে ঘরের মাঠে ওয়ানডে সিরিজ জয়ে ব্যাট হাতে অন্যতম নায়ক মুশফিকুর রহীম। দেশের এই ব্যাটিং ভরসা প্রথম ম্যাচে ৮৪ ও দ্বিতীয়টিতে ১২৫ রান করেন। তার এনে দেয়ঙা পুঁজিতেই বোলাররা পেয়েছেন লড়াইয়ের সুযোগ। বাংলাদেশের এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান অবশ্য নিজের এই কৃতিত্বকে শুধু মাইলস্টোন হিসেবেই দেখছেন। তার কাছে দলের জয়ই বড়। মুশফিকুর রহীম বলেন, ‘একশ তো একটা মাইলস্টোন। কিন্তু এটা একটা ব্যক্তিগত ব্যাপার। অল ইন অল আপনার দল জিতলো কি না সেটা সবচেয়ে বেশি ম্যাটার করে। একশ করলেও হয়তো আমরা ম্যাচটা নাও জিততে পারতাম। আমার মেইন টার্গেট ছিল যাতে পঞ্চাশ ওভার ব্যাট করতে পারি। যত রানই হোক, সেটা নিয়ে যেন ফাইট করতে পারি।’ প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৬ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রান। জবাবে লঙ্কানরা হারে ৩৩ রানে। আর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে মুশফিক ১২৫ করলেও আড়াইশও ছুঁতে করতে পারেনি দল। তবুও জয় আসে ১০৩ রানে। ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনা কমেনি একটুও। তবে মুশফিক জানিয়েছেন আবহওয়া ও উইকেট অনুযায়ী এই রান তোলাও কঠিন ছিল। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি ২৪৬ যথেষ্ট ভালো ছিল। এই উইকেটে অনেক ফাইটিং স্কোর।
আমরা মানিসকভাবে তৈরি ছিলাম এমন আবহাওয়ায় হয়তো কার্টেল ওভার হতে পারে।’
দলে ব্যাট হাতে যাদের মুশফিক, তামিমদের বিকল্প ভাবা হচ্ছে সেই লিটন দাস, আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেনদের ব্যর্থতা বেশ দৃষ্টিকটু। মুশফিকও মনে করেন সুযোগ ছিল লিটনদের। তিনি বলেন, ‘ওদের জন্য সুযোগ ছিল। আমি মনে করি ওরা চেষ্টা করেছে। কিন্তু ওরা আরেকটু সিলেক্টিভ হলে ভালো রেজাল্ট করবে। এসব উইকেটে আরেকটু সিলেক্টিভ হতে হবে। কখন লো রিস্ক খেলবে, কখন হাই রিস্ক, এটা নিজেকেও জানতে হবে। আমি আশা করি তারা আরও ম্যাচিউর হবে সময়ের সঙ্গে। খুবই খুশি হবো যদি ওরা খুব তাড়াতাড়ি এখান থেকে শিক্ষা নিতে পারে। নাহলে দেখা যাবে সব প্রেশার আমাদের ওপর চলে আসে, তখন আসলে কঠিন হয়ে যায়। আমি মনে করি ওরা দ্রুতই কন্ট্রিবিউট করা শুরু করবে। আর সেটা হলে আমরা স্পেশালি ওয়ানডেতে আরও ভালো দল হবো।’
দ্বিতীয় ম্যাচে একাদশ থেকে বাদ পড়েন মোহাম্মদ মিঠুন ও তাসকিন আহমেদ। তাদের পরিবর্তে দলে আসেন ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেন ও তরুণ পেসার শরিফুল ইসলাম। যদিও বলের আঘাতে আহত সাইফুদ্দিনের কনকাশন সাব হিসেবে পরে তাসকিন বল করেছেন। এরই মধ্যে স্কোয়াডে প্রবেশ করেছেন তরুণ ব্যাটসম্যান নাঈম শেখ। তাই লিটন দাস পরের ম্যাচে একাদশে খেলবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ওপেনিংয়ে তামিম ইকবালের সঙ্গী হিসেবে দেখা যেতে পারে নাঈমকে। আর গতকাল স্ক্যান শেষে অবজারভেশনে রাখা হয় সাইফুদ্দিনকে। যে কারণে শেষ ম্যাচে পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ এমনটাই অনুমেয়।