লজ্জার রেকর্ডে সিরিজ হার ইংল্যান্ডের

‘প্রথম দুই ম্যাচের স্কোরলাইন দেখে মনে হতে পারে অস্ট্রেলিয়া আমাদের চেয়ে অনেক ভালো দল। কিন্তু আমি তেমনটা মনে করি না। আমরা যদি নিজেদের সামর্থ্যরে ধারে কাছেও যেতে পারি তাহলে তাদের অস্বস্তিকর অবস্থায় ফেলতে পারবো।’- মেলবোর্ন টেস্টের আগে আশার বাণীগুলো শুনিয়েছিলেন ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জো রুট। তবে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এবারও সামর্থ্যরে ধারে কাছে পৌঁছতে পারেনি ইংলিশরা। লজ্জার ইতিহাস গড়ে ইনিংস ব্যবধানে পরাজিত হয়েছে সফরকারীরা। এই জয় দিয়ে অ্যাশেজ সিরিজে ৩-০তে এগিয়ে গিয়েছে অজিরা।

দ্বিতীয় দিনশেষে ২২ রান করতে ৪ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে ইংলিশদের প্রয়োজন ছিল ৫১ রান। তৃতীয় দিনে এই রানই টপকাতে ব্যর্থ হয় তারা।
অজি বোলারদের সামনে মাত্র ৬৮ রানেই গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। এক ইনিংস ও ১৪ রানের ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নেয় অস্ট্রেলিয়া।

অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অ্যাশেজ সিরিজে দুই দলের মধ্যে ৮৫ বছর পর (১৯৩৬ সালে) সর্বনিম্ন রানে অলআউট হলো ইংল্যান্ড। আর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ১৯০৪ সালের পর এত কম রানে অলআউট হয়নি ইংলিশরা।
বক্সিং ডে টেস্টে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের তুলনায় প্রথম ইনিংসকে সমৃদ্ধ বলা যেতেই পারে। ১৮৫ রান করে অলআউট হয় সফরকারীরা। জবাবে ২৬৭ রানে প্রথম ইনিংস শেষ করে অস্ট্রেলিয়ার। ৮২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরুর করার পরই অজি বোলারদের তোপের মুখে পড়ে ইংলিশরা। দ্বিতীয় শেষ বিকেলেই মিচেল স্টার্ক আর স্কট বোল্যান্ডের বোলিং তোপের মুখে ২২ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে। এই বোলার নিয়েছেন সমান ২টি করে উইকেট। ৪ উইকেট হারিয়ে ৩১ রান নিয়ে দিনশেষ করে ইংল্যান্ড। জো রুট ১২ এবং বেন স্টোকস অপরাজিত ছিলেন ২ রান নিয়ে।

তৃতীয় দিনে ৯ রান করে মিচেল স্টার্কের উইকেটে পরিণত হন স্টোকস। ২৮ রান নিয়ে বোল্যান্ডের বলে ফেরেন অধিনায়ক রুট। যা দ্বিতীয় ইনিংসে দলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ।
জনি বেয়ারেস্ট আউট হন ৫ রান করে। জস বাটলার ৫ রানে অপরাজিত থাকেন। মার্ক উড এবং ওলি রবিনসন ফেরেন শূন্য রানে। বোল্যান্ডের তিন বলের ব্যবধানে এই দু’জন আউট হন শূন্য রানে। জেমস অ্যান্ডারসন করেন ২ রান। ক্যামেরন গ্রিনের বলে অ্যান্ডারসন আউট হতেই বিজয়োল্লাসে মেতে ওঠে অস্ট্রেলিয়ানরা।

অস্ট্রেলিয়ার অভিষিক্ত পেসার স্কট বোল্যান্ডের তোপেই তৃতীয় দিনে টিকতে পারেনি ইংল্যান্ড। একাই ৬ উইকেট নিয়ে অভিষেক ম্যাচটা রাঙালেন এই মিডিয়াম ফাস্ট বোলার।
অসাধারণ বোলিং করার কারণে ম্যাচ সেরার পুরস্কার মুলাগ স্বর্ণ পদক অর্জন করেন। জনি মুলাগের নামেই প্রবর্তন করা হয়েছে এই পুরস্কারটি। ১৮৮৬ সালে অস্ট্রেলিয়ান দলের সঙ্গে ইংল্যান্ড সফর করেছিলেন আদিবাসী জনি মুলাগ। আবার এই স্কট বোল্যান্ড হলেন অস্ট্রেলিয়ার হয়ে খেলা চতুর্থ আদিবাসী ক্রিকেটার।

এই হারে ইংল্যান্ড স্পর্শ করেছে বাংলাদেশের এক বছরে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ হারের লজ্জার রেকর্ড। ২০২১ সালে মোট ৯ ম্যাচ হেরেছে। বাংলাদেশ ২০০৩ সালে এই লজ্জার রেকর্ড গড়েছিল। ৯টি ম্যাচের সবকটিই হেরেছিল টাইগাররা। আর ইংলিশরা ১৫ ম্যাচে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *