রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া এখনো শুরু না হওয়ায় বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এছাড়া হংকং চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। সেই সঙ্গে ‘এক চীন নীতি’র প্রতি বাংলাদেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। চীনের রাষ্ট্রদূত গতকাল ঢাকায় আবদুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাত্কালে এসব বিষয়ে আলোচনা করেন।
আবদুল মোমেন রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের ব্যাপারে চীনের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হলে তারা এ এলাকার নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠবে। কিছু রোহিঙ্গা মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি দুই দল রোহিঙ্গার সংঘর্ষে আটজন মারা গেছে। তাছাড়া কাটা তারের বেড়া না থাকায় এসব ঘটনা উত্তরোত্তর বাড়ছে। প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দেরি হওয়ায় দিনে দিনে রোহিঙ্গা এবং বিদেশী সাহায্যকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর স্থানীয় জনগণের অসন্তুষ্টি ঘনীভূত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সীমান্তে মিয়ানমারের সৈন্য সমাবেশ ঘটানোয় উদ্বেগ প্রকাশ করেন আবদুল মোমেন। তিনি উল্লেখ করেন, রোহিঙ্গাদের জন্য মানবিক সাহায্য প্রদান এবং জীবনমানের উন্নয়ন এ সমস্যা সমাধানের জন্য যথেষ্ট নয়। বরং তাদের প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে সমস্যার স্থায়ী সমাধান দরকার। চীনের রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে তার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পিরোজপুরে চীনের নাগরিক হত্যাকারীদের দ্রুত বিচারের অওতায় আনা হবে এবং সরকার এ বিষয়ে অত্যন্ত তত্পর। এ ঘটনার প্রধান আসামীসহ দুজনকে এরই মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে।
করোনা মহামারীর কারণে আটকে পড়া চীনে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীদের ভিসা নবায়নের বিষয়ে চীন সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান আবদুল মোমেন। ছাত্রছাত্রীদের বিষয়ে চীন সরকার দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে বলে চীনের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন। লি জিমিং বলেন, এরই মধ্যে ব্যবসায়ী ও পারিবারিক পুনর্মিলনের ক্ষেত্রে ভিসা দেয়া শুরু হয়েছে।
চীনের রাষ্ট্রদূত জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রচিত ‘আমার দেখা নয়াচীন’ বইটি চীনা ভাষায় অনুবাদ করা হচ্ছে এবং তা শিগগিরই প্রকাশিত হবে।
চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি ধন্যবাদ জানান। এছাড়া চীনের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে লেখা সে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র একটি চিঠি হস্তান্তর করেন। এতে হংকং চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয় হিসেবে উল্লেখ করায় ড. এ কে আবদুল মোমেনকে চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ধন্যবাদ জানান।