রাশিয়ার ওপর ইইউর ধারাবাহিক নিষেধাজ্ঞা

রাশিয়ার ওপর আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমশ প্রবল হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলো ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইউক্রেনের ওপর বিনা কারণে অতর্কিত হামলা করায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইইউ। বৈশ্বিক পেমেন্ট ব্যবস্থা সুইফটে (সোসাইটি ফর ওয়ার্ল্ডওয়াইড ইন্টারব্যাংক ফিন্যান্সিয়াল টেলিকমিউনিকেশন্স) রাশিয়ার প্রবেশাধিকার বন্ধ করার আশঙ্কাও রয়েছে। খবর রয়টার্স।

ইইউ জানিয়েছে, রাশিয়াকে অর্থনৈতিক ভাবে পঙ্গু করে দিতে দুই দফা নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জোটটি। এভাবে করে রাশিয়া যেন কোনোভাবেই যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থায়ন করতে না পারে, মূলত সে ব্যবস্থা নিচ্ছে ইইউ। এরই ধারাবাহিকতায় কয়েকশোজনকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়। এদের মধ্যে কয়েকজন রাশিয়ার সংসদ সদস্যও রয়েছে। ইইউ জোট জানায়, এরই মধ্যে তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। জোটভুক্ত দেশগুলোয় ভ্রমণ করতেও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে তাঁদের ওপর।

ইইউর কালো তালিকায় রয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জে লাভরোভ। যদিও তাঁরা ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত। আলোচনা করার নিমিত্তে রাশিয়ার জন্য পথ খোলা রাখতেই ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে রুশ প্রেসিডেন্ট এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে। বর্তমানে ইইউর কালোতালিকাভুক্ত তিন বিশ্বনেতাদের মধ্যে পুতিনের সঙ্গে রয়েছে সিরিয়ার রাষ্ট্রপতি বাশার আল-আসাদ এবং বেলারুশের রাষ্ট্রপতি আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পুঁজি বাজারে রাশিয়ার প্রবেশাধিকার রুখতে রুশ অর্থনীতিকে লক্ষ্য করে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। মোট তিনটি প্রধান রুশ ব্যাকের ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এছাড়াও দেশটির বেশ কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে জোটটি। পাশাপাশি ইইউ ব্যাংকগুলোয় রুশ আভিজাত্যদের অর্থ লেনদেন বন্ধ করা হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করার লক্ষ্যে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ অনান্য বাণিজ্যিক ব্যাংক এবং রুশ সরকারের সিকিউরিটি লেনদেনও বাতিল করেছে ইইউ। ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন জানান, রুশ সরকারসহ দেশটির ৭০ শতাংশ ব্যাংকিং ব্যবস্থা এবং প্রধান রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলো জোটভুক্ত দেশগুলোর পুঁজি বাজারে পুনরায় অর্থায়ন করতে পারবে না।

এদিকে রাশিয়া থেকে নির্দিষ্ট কিছু পরিশোধক প্রযুক্তির আমদানি বন্ধ করেছে ইইউ। এতে করে রাশিয়ায় তেল শোধন করা ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে বিশ্বের অন্যতম প্রধান তেল উত্পাদক দেশটির জন্য। জোটটি জানিয়েছে, ২০১৯ সালে পরিশোধিত তেল ইইউ অঞ্চলে রফতানি করে দেশটি ২ হাজার ৪০০ কোটি ইউরো আয় করেছে। আমদানি বন্ধ করার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশটি, যা যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে প্রতিকূল।

আমদানির পাশাপাশি রাশিয়া থেকে পণ্য রফতানিও বন্ধ করেছে ইইউ। উড়োজাহাজ, উড়োজাহাজের যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জামের সব ধরনের বিক্রি ও রফতানি বন্ধ ঘোষণা করা হয়।

এদিকে কূটনৈতিক পাসপোর্টধারী রাশিয়ানরা ইইউভুক্ত দেশগুলোয় ভিসাবিহীন ভ্রমণের সুযোগ হারিয়েছে। ভিসার জন্য আবেদন করতে নিম্ন ফি সুবিধা চিল রুশ সরকারি কর্মকর্তা এবং ব্যসায়ীরা। বর্তমানে এ সুবিধা থেকেও বঞ্চিত রয়েছে তাঁরা।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *