রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, রক্তের বিনিময়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ১৯৭১ সালে বীর মুক্তিযোদ্ধারা স্লোগান দিয়েছিলেন, বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।
আবারও সময় এসেছে। আবারও স্লোগান ধরতে হবে-বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো। জিয়াউর রহমানসহ সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে সম্মান জানাতে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

রোববার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দল ও মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ বলেন, আমরা যারা যুদ্ধ করেছিলাম, আমাদের সামনে একটাই চ্যালেঞ্জ, এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণ করতে হবে। দেশের দুর্নীতিপরায়ণ সরকারের হাত থেকে মুক্ত করে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

তিনি বলেন, গতকাল একজন মন্ত্রী বললেন, জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তার তথ্য প্রমাণ না কি তাদের কাছে আছে। ১৫ আগস্ট সকাল সাড়ে ৬টার সময় আমি তৎকালীন উপ-প্রধান সেনাপতি মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের বাসায় গিয়েছিলাম। আমি তাকে বললাম ৩২ নম্বরের ওপরে আক্রমণ চালানো হয়েছে। আপাদমস্তক সৈনিক জিয়াউর রহমান বলেছেন, সো হোয়াট প্রেসিডেন্ট ইজ কিল্ড, ভাইস প্রেসিডেন্ট ইজ দেয়ার। প্রেসিডেন্ট নেই তো কি হয়েছে, উপ-রাষ্ট্রপতি আছেন। আমরা সৈনিক, আমরা সংবিধানকে সমুন্নত রাখবো। আমি এবং সাফায়েত জামিল সাক্ষী। তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন, কিন্তু বইয়ে লিখে গেছেন। আমি লেখক নই, তাও একটা বই লিখেছি আমার জীবনের ঘটনা নিয়ে। সেখানে এই ঘটনা লেখা আছে। তিনি সৈনিক, আপাদমস্তক সৈনিক ছিলেন, কোনো ষড়যন্ত্রের সঙ্গে কখনও জড়িত ছিলেন না।

মেজর হাফিজ আরও বলেন, একটি কাহিনী অবতারণা করা হয়েছে। কর্নেল ফারুক, যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছেন। তিনি নাকি কোন সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার আগে আমরা জিয়াউর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। জিয়াউর রহমান বলেছেন, আমি সিনিয়র অফিসার, আমি এসবের মধ্যে নেই, তোমরা পারলে করো। এটা সর্বৈব একটি মিথ্যা কথা।

তিনি বলেন, এ সেই কর্নেল ফারুক, ১৯৭৭ সালে লিবিয়া থেকে এসে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সরকারের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থানের প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। তিনি গোপনে এসে বগুড়া ক্যান্টনমেন্টে গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন, ঢাকায় এসে জিয়াউর রহমানের সরকারকে উৎখাত করার ইচ্ছা ব্যক্ত করেছেন। জিয়াউর রহমান দক্ষ সেনানায়ক, দক্ষ রাষ্ট্রনায়ক। তিনি কঠোর হস্তে ফারুককে দমন করেছেন এবং বিমানে করে বিদেশে পাঠিয়ে দিয়েছেন। ফারুকের সঙ্গে যদি আতাত থাকতো, তাহলে কেন ফারুক, ১৯৭৭ সালে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হয়ে জিয়াউর রহমানকে উৎখাত করতে এসেছিল? এগুলো কোনো কল্পকথা নয়, বাস্তবতা।

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল অব. সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেন, আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, শিরিন সুলতানা, গণফোরাম নেতা মোস্তাক হোসেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *