৪০ লাখ টাকা ঘুষ দেয়া ও নেয়ার মামলায় পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমান ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক (সাময়িক বরখাস্ত) খন্দকার এনামুল বাছিরের বিরুদ্ধে দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্ল্যা সাক্ষ্য দিয়েছেন। গতকাল মামলাটির বাদী হিসেবে তিনি প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দেন। তিনি এজাহারের সমর্থনে আদালতে জবানবন্দি প্রদান করেন। ঢাকার চার নম্বর বিশেষ জজ শেখ নাজমুল আলম সাক্ষীর ওই জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
জবানবন্দির সময় বাছিরের পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকেট সৈয়দ রেজাউর রহমান এবং মিজানের পক্ষে অ্যাডভোকেট এহসানুল হক সমাজী জেরার জন্য সময় আবেদন করেন, যা আদালত মঞ্জুর করে আগামী ২ সেপ্টেম্বর জেরার পরবর্তী তারিখ ঠিক করেন।
এ মামলায় গত ১৯ জানুয়ারি দুদকের পরিচালক শেখ মো. ফানাফিল্ল্যা আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলার চার্জশিটে বলা হয়, দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর থেকে ডিআইজি মিজানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগের অনুসন্ধানকারী ছিলেন।
অনুসন্ধান চলাকালে ২০১৯ সালের ৯ জুন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয় যে, ডিআইজি মিজান অনুসন্ধান সংশ্লিষ্ট এনামুল বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ/উেকাচ দিয়েছেন। তাত্ক্ষণিকভাবে দুদক একটি তদন্ত কমিটি করে তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পায়। এরপর এ-সংক্রান্ত তিন সদস্যের অনুসন্ধান কমিটিও ঘটনার সত্যতা পাওয়ায় মামলাটি রজু করা হয়।
চার্জশিটে আরো বলা হয়, মামলার তদন্তকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন, সাক্ষীদের বক্তব্য গ্রহণ এবং এনটিএমসি হতে প্রাপ্ত বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয়, ২০১৯ সালের ১৫ জানুয়ারি ও ২৫ ফেব্রুয়ারি ডিআইজি মিজান একটি বাজারের ব্যাগে কিছু বইসহ যথাক্রমে ২৫ লাখ টাকা ও ১৫ লাখ টাকা রমনা পার্কে এনামুল বাছিরকে দুই দফায় প্রদান করেন, যার চাক্ষুস সাক্ষী আসামি মিজানের দেহরক্ষী হূদয় হাসান ও অর্ডারলি মো. সাদ্দাম হোসেন।
২০১৯ সালের ১৬ জুলাই দুদকের একই কর্মকর্তা আসামি মিজান ও বাছিরের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। মামলার পর ২২ জুলাই রাতে রাজধানীর মিরপুরের দারুস সালাম এলাকা থেকে এনামুল বাছিরকে গ্রেফতার করা হয়। পরদিন তাকে একই আদালতে হাজির করা হলে আদালত জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এর আগে ঘুষ প্রদানের তথ্য মিডিয়ায় প্রকাশ করে আত্মগোপনে থাকা ডিআইজি মিজানকে একই বছর ১ জুলাই হাইকোর্ট পুলিশের হাতে তুলে দেয়। পরদিন নিম্ন আদালতে হাজির করা হলে তার জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়।