করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মাশরাফি বিন মুর্তজার শারীরিক অবস্থা ভালো। ওয়ানডের সফলতম অধিনায়ক তার বাসায়ই আছেন। তার চিকিৎসা তদারকি করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আব্দুল্লাহ। কেউ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে ফলো-আপ চেকআপের জন্য বুকের একটি এক্সরের নির্দেশনা দেন চিকিৎসকরা। মাশরাফিকেও সেই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তার পরিবার সেই এক্সরে করানোর জন্য সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) যোগাযোগ করেছে। মাশরাফির অ্যাজমার সমস্যা থাকলেও বুকে ব্যথা নেই। তার ছোট ভাই মোরসালিন বিন মুর্তজা জানিয়েছেন, ফলো-আপ চেকআপ করানোর কথা ভাবছেন তারা।
তিনি বলেন, ‘ভাই ভালো আছেন। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক নিয়মিত খোঁজ খবর রাখছেন। করোনা হলে বুকের একটি ফলো-আপ এক্সরে দেয়া হয়। ভাইকেও সেই এক্সরে করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। আমরা যোগাযোগ করছি হাতপাতালে। তবে ভাইয়ের বুকে কোনো ব্যথা নেই। এটা অ্যাজমার টেস্ট নয়।’ করোনা আক্রান্ত রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস ঠিকমতো চলছে কিনা, সেটার অবস্থা জানতে বুকে এক্সরে করানোর নির্দেশনা দিয়ে থাকেন চিকিৎসকরা। সেটারই অংশ হিসেবে মাশরাফির বুকের এক্সরে করানো হতে পারে। এদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দিন চৌধুরী বলেছেন, ‘আব্দুল্লাহ স্যারের (প্রধানমন্ত্রীর চিকিৎসক) প্রেসক্রিপশন পাঠানো হয়েছে মাশরাফিকে। বিসিবি সভাপতি তার সঙ্গে কথা বলেছেন।’
বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানিয়েছেন, মাশরাফির পুরোনো অ্যাজমা রোগ নিয়ে তারা একটু চিন্তিত। তবে এখন পর্যন্ত কোনো সমস্যা দেখা দেয়নি। শুধু ঘুম একটু কম হচ্ছে। ‘সে অ্যাজমার রোগী। যাদের অ্যাজমা আছে তাদের বেশি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যেহেতু আগে থেকে তাদের ফুসফুস দুর্বল হয়ে আছে। ওর চিকিৎসা ব্যবস্থা আব্দুল্লাহ স্যার দেখছেন।’ করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকেই মাশরাফি সংকট মোকাবিলায় সক্রিয় ছিলেন। নিজের নির্বাচনী এলাকায় নানা ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করে প্রশংসিত হন। মাশরাফির অ্যাজমা থাকলেও খুব একটা সমস্যা হবে না বলে মনে করছেন বিসিবির চিকিৎসকেরা। কারণ ক্রিকেটার হওয়ায় তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ ভালো। আর মানসিকভাবে তিনি দৃঢ় হওয়ায় ইমিউনিটিও ভালো কাজ করার কথা। ২২০ ওয়ানডেতে ২৭০ উইকেট নেয়া মাশরাফি ক্যারিয়ারের প্রথম দশ বছর অহরহ ইনজুরিতে ভুগলেও গত কয়েক বছর নিয়মিত ক্রিকেট খেলছেন। শেষ ৫ বছরে মাত্র ৫টি ওডিআই মিস করেছেন তিনি। একের পর এক অস্ত্রোপচারের ধকল সয়েও এই অসম্ভবকে তিনি সম্ভব করেছেন ওই মানসিক শক্তির বলেই। দুদিন ধরে জ্বর থাকায় গত শুক্রবার রাতে করোনা টেস্ট করান মাশরাফি। শনিবার দুপুরে টেস্ট হাতে পেয়ে জানতে পারেন তিনি করোনা পজেটিভ। এরআগে তার শাশুড়ি ও তার স্ত্রী সুমনা হক সুমির বোনের মেয়ে করোনায় আক্রান্ত হন।