মহামারীতে জ্বালানি তেল আমদানি বাড়িয়েছে চীন

চলতি বছরের শুরু থেকে নভেল করোনাভাইরাসের মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াই করেছে চীন। সংক্রমণ এড়াতে টানা লকডাউনে কার্যত স্থবির ছিল দেশটির বড় শহরগুলো। মানুষ ছিল ঘরবন্দি। কৃষি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, পরিবহন খাতে নেমে এসেছিল অচলাবস্থা। এ পরিস্থিতি চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা কমিয়ে দিয়েছিল। এর পরও বছরের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) জ্বালানি পণ্যটির আমদানি প্রায় ১০ শতাংশ বাড়িয়েছে চীন। দেশটির সরকারি সূত্রের বরাতে রয়টার্সের এক বিশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি-জুন সময়ে চীনা আমদানিকারকরা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সব মিলিয়ে ২৬ কোটি ৯০ লাখ টন অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছেন। দৈনিক

হিসাবে এর গড় পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেলে। এক বছরের ব্যবধানে দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির আমদানি বেড়েছে ৯ দশমিক ৯ শতাংশ।

তবে লকডাউনের কারণে বছরের শুরুর দিকে চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি তুলনামূলক শ্লথ ছিল। যত দিন গেছে, জ্বালানি পণ্যটির আমদানি বাড়িয়েছে চীন। লকডাউন পুরোপুরি উঠে যাওয়ার পর অর্থনীতিতে গতি ফেরায় সর্বশেষ তিন মাসে (এপ্রিল, মে ও জুন) জ্বালানি তেলের আমদানি রেকর্ড পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত জুনে চীনা আমদানিকারকরা আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রতিদিন গড়ে ১ কোটি ১৯ লাখ ৩০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি করেছেন। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় গত জুনে দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির আমদানি

বেড়েছে ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ। চলতি বছরের মে মাসে দেশটিতে প্রতিদিন গড়ে ১ কোটি ১৩ লাখ ৪০ হাজার ব্যারেল অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানি হয়েছিল।

অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের শীর্ষ ভোক্তা দেশগুলোর তালিকায় চীনের অবস্থান বিশ্বে দ্বিতীয়। একই সঙ্গে চীন জ্বালানি পণ্যটির শীর্ষ আমদানিকারক দেশ। এ কারণে চীনের বাজারে চাহিদা ও আমদানির উত্থান-পতন আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণে প্রভাবক হিসেবে কাজ করে। করোনা মহামারীর শুরুর দিকে চীনে চাহিদার পতনে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের রেকর্ড দরপতন দেখা দিয়েছিল। কমতে কমতে এক পর্যায়ে জ্বালানি তেলের ব্যারেল শূন্য ডলারের নিচে নেমে যায়।

এখন অর্থনীতির গতি ফেরার সঙ্গে সঙ্গে চীনে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের চাহিদা ও আমদানি—দুটোই বাড়তির দিকে রয়েছে। দেশটিতে বাড়তে শুরু করেছে জ্বালানি তেলের মজুদও। এ পরিস্থিতি আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি পণ্যটির দাম আগের তুলনায় বাড়িয়ে দেবে, এটা অনুমেয়।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *