মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে টিসিবির পণ্য পৌঁছে দেবে ই-কমার্স

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য ন্যায্যমূল্যে মধ্যবিত্ত মানুষের ঘরে পৌঁছে দেবে ই-কমার্স। গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং টিসিবির সহযোগিতায় ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন (ই-ক্যাব) আয়োজিত ‘মাহে রমজানে ঘরে বসে স্বস্তির বাজার’ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।

ই-ক্যাবের প্রেসিডেন্ট শমী কায়সারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন। সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ডব্লিউটিও সেলের মহাপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব (আমদানি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য) এএইচএম শফিকুজ্জামান।

চলমান কভিড-১৯ পরিস্থিতিতে ই-কমার্সের জনপ্রিয়তা বাড়ছে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রয়ের লক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন টিসিবি ট্রাক সেলের মাধ্যমে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ যাতে এ সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, সেজন্য সরকার ই-কমার্সের সহযোগিতায় ভোজ্যতেল, ছোলা, চিনি ও ডাল এ চার পণ্য বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছর প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকার বাণিজ্য হয়েছে অনলাইনে। সরকার ই-কমার্সকে সহযোগিতা করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে। ই-কমার্সে নিয়োজিত জনবলকে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকার প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। মানুষ যাতে প্রতারিত না হয় এবং ঘরে বসে ই-কমার্সের সুবিধা ভোগ করতে পারে। চলমান ই-বাণিজ্যে যেসব ভুলত্রুটি ধরা পড়ছে, সেগুলো যাতে পুনরায় না ঘটে, সে বিষয়ে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

এ উদ্যোগের ফলে মানুষ ই-কমার্সের প্রতি আস্থাশীল হবে বলে আশা প্রকাশ করেন বাণিজ্যমন্ত্রী। ই-কমার্সের কর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঘরে ঘরে পণ্য পৌঁছে দিচ্ছেন। এটি একটি মহতী ও প্রশংসনীয় কাজ। এ বিপদের সময় মানুষ ঘরে বসে পণ্য ক্রয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করেছি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার জন্য। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধা মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়ে বঙ্গবন্ধুর সেই সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। ২০০৯ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন। আজ ডিজিটাল সুবিধা ভোগ করছে দেশের মানুষ। ই-কমার্স খুব কম সময়ের মধ্যে জনপ্রিয়তা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন টিসিবির পরিচালক (যুগ্ম সচিব) মইন উদ্দিন আহমেদ, ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক জিয়া আশরাফ, স্বপ্ন অনলাইনের পরিচালক শাহেদুল ইসলাম, চালডাল ডট কমের পরিচালক ইশরাত জাহান নাবিলা এবং ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল ওয়াহেদ তমাল।

উল্লেখ্য, ই-ক্যাব আয়োজিত ডিজিটাল হাট ডট নেটের আটটি প্রতিষ্ঠান ন্যায্যমূল্যে দেশের মধ্যবিত্ত মানুষের সুবিধার্থে অনলাইনে টিসিবির পণ্য বিক্রয় করছে। গতকাল থেকে আগামী ৬ মে পর্যন্ত ভোজ্যতেল, ছোলা, চিনি ও ডাল এ চার পণ্যের বিক্রি শুরু করা হয়েছে। ভোজ্যতেল প্রতি লিটার ১০৮ টাকা এবং চিনি, ছোলা ও ডাল ৫৮ টাকা দরে বিক্রয় করছে। একজন ক্রেতা সপ্তাহে পাঁচ লিটার তেল ও তিন কেজি করে চিনি, ছোলা, ডাল ক্রয়ের সুযোগ পাবেন। ডেলিভারি চার্জ সর্বোচ্চ ঢাকা শহরে ৩০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রাথমিক পর্যায়ে ঢাকা, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ জেলায় এসব পণ্যের বিক্রি শুরু হয়েছে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *