সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনার ভ্যাকসিন যখনই বাজারে আসবে তখনই পাবে বাংলাদেশ। জনগণ যাতে এ ভ্যাকসিনের সুবিধা পায় সে ব্যাপারে শেখ হাসিনার সরকার অত্যন্ত আস্থা ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে এগিয়ে যাচ্ছে। ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। ইতোমধ্যে অনেকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। ভ্যাকসিনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি আছে। বিশ্বে যখন ভ্যাকসিন বিতরণ শুরু হবে, তখন বাংলাদেশও পাবে। এটা আমি জোর গলায় বলতে পারি।
গতকাল ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ এবং স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপকমিটির যৌথ উদ্যোগে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে কর্মরত চিকিৎসকদের মধ্যে উন্নতমানের এন৯৫ ও সার্জিক্যাল মাস্ক বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। তিনি সংসদ ভবন এলাকার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনা সমস্যা সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক বিপর্যয় সৃষ্টি করলেও শেখ হাসিনার গৃহীত পদক্ষেপের কারণে আমাদের এখানে প্রকটতা কম। এ পদক্ষেপের কারণে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করতে পারেনি। বিশ্ব মন্দার মধ্যে বৈদেশিক সহায়তার ওপর আমাদের অর্থনৈতিক নির্ভরতা কমছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা যদি সংক্রমণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হই তবে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের এ ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখতে পারব। আজ সর্বকালের সর্বোচ্চ বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৪১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বে।
কাদের বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষের পাশে থেকে সার্বিক সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তারা করোনা ও ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী সময়ে মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে অসংখ্য মানবিক কার্যক্রম পরিচালিত করেছেন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
কাদের বলেন, বৈশ্বিক এ ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ বাংলাদেশেও আঘাত করার আশঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার আগের চেয়েও বেড়েছে। ইউরোপ ও আমেরিকায় আজ দ্বিতীয় ঢেউ পার হচ্ছে। ভয়াবহ সংকট সারা বিশ্বে। তৃতীয় তরঙ্গেরও আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। বিশেষত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কাজেই করোনার গতি-প্রতিকৃতি কোন দিকে যায় এটা বলা মুশকিল। তার পরও এ পর্যন্ত শেখ হাসিনার মতো দূরদৃষ্টিসম্পন্ন নেতৃত্ব আছে বলেই এ সংকট সাহসিকতার সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে অনেকটা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের নিজেদের সুরক্ষার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করতে হবে। আমি মনে করি, দলের সব স্তরের নেতাকর্মীদের মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক। এ নেতাকর্মীরাই প্রচার করবেন, জনগণকে উদ্বুদ্ধ করবেন আত্মরক্ষা, সুরক্ষার জন্য। এ বিষয়ে প্রচারণা আমাদের সাংগঠনিক দায়িত্বের মধ্যে পড়েছে শেখ হাসিনার নির্দেশের পর। শুধু নিজেরাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন না, দেশের জনগণকেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করবেন।
ওবায়দুল কাদের ডাক্তার মিলনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান এবং অভিনেতা আলী যাকেরের মৃত্যুতেও গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান প্রমুখ।