কভিড-১৯ মহামারীর মধ্যে মাস্ক, ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম (পিপিই) ও পরীক্ষা নিয়ে যে অনিয়মের ঘটনা ঘটেছিল, ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে তার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে সংসদীয় কমিটি। গতকাল স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে যুক্তরাজ্যে করোনাভাইরাসের নতুন ধরন দ্রুত ছড়ানোর প্রেক্ষাপটে দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের আকাশপথে যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ করার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলেছে সংসদীয় কমিটি। বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছে সংসদীয় কমিটি।
শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, মুহিবুর রহমান মানিক, মো. আব্দুল আজিজ, সৈয়দা জাকিয়া নুর, রাহগির আলমাহি এরশাদ এবং মো. আমিরুল আলম মিলন বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠকে কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নভেল করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন সরকারের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রেখে জেলা সরকারি হাসপাতাল এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে প্রদান করতে হবে।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শেখ সেলিম বণিক বার্তাকে বলেন, গত ২৪ মার্চ আমরা যে বৈঠক করেছিলাম সেখানে করোনা মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়ে অনেক কিছুই বলা হয়েছিল। কিন্তু সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর আমরা দেখলাম, আমাদের প্রাথমিক প্রস্তুতিতে ঘাটতি ছিল। মাস্ক আর করোনা পরীক্ষা নিয়েও কেলেঙ্কারি হয়েছিল। ভ্যাকসিন নিয়ে আমরা এ রকম পরিস্থিতি দেখতে চাই না। টিকা সংরক্ষণের ব্যবস্থা আগে থেকে নিতে হবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সরকারি চিকিৎসকদের টিকা দেয়ার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। বেসরকারি খাতে এ টিকা দেয়া যাবে না। যদি কেউ বিদেশ থেকে টিকা আমদানি করতে চায় তবে সরকারের অনুমতি নিয়ে করতে হবে।
সংসদীয় কমিটির সভাপতি জানান, শিশুদের উপযোগী করোনার টিকা যাতে বাংলাদেশ প্রথম থেকেই পায় সেজন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন করোনাভাইরাসের টিকা উৎপাদকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস এবং কোভ্যাক্সের আওতায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে ২০২১ সালের জুনের মধ্যে ৪ কোটি ৯০ লাখ ডোজ টিকা পাওয়া যাবে।
যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্লাইট বন্ধের বিষয়ে কমিটির সভাপতি শেখ ফজলুল করিম সেলিম জানান, যুক্তরাজ্যে করোনার যে নতুন ধরন পাওয়া গেছে তা বাংলাদেশে আছে কিনা এখনো নিশ্চিত নয়। কিন্তু ফ্লাইট যেহেতু চলছে, আসার আশঙ্কা থেকে যায়। এ কারণে আমরা বিমান মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে সাময়িকভাবে ফ্লাইট বন্ধ করতে বলেছি। কোয়ারেন্টিন যাতে কঠোরভাবে মানা হয় সেদিকেও লক্ষ রাখতে বলেছি আমরা। প্রথম যখন দেশে সংক্রমণ হলো তখন কোয়ারেন্টিন নিয়ে কিছু গাফিলতি ছিল। সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।