ভোজ্যতেলের বাজার থেকে হাজার কোটি টাকা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে

মিল মালিকরা বলছেন, যথেষ্ট তেল মজুদ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক মাস ধরে অর্ডার (এসও) কেটে তেল পাচ্ছেন না, যা ১৫ দিনের মধ্যে পাওয়ার কথা। ফলে বাজারে দেখা দিয়েছে ভোজ্যতেলের সংকট। বাধ্য হয়ে ভোক্তারা কয়েক দিন ধরে বেশি দামে সয়াবিন তেল কিনছেন। এমন পরিস্থিতিতে তেলে কারসাজি করে বাজার থেকে ১ হাজার কোটি টাকা উঠিয়ে নেয়া হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান। তিনি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এ টাকা কে নিল তা দেখা হবে।

গতকাল বুধবার ভোজ্যতেলের সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে মিল মালিক ও বাজার ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় বিভিন্ন মিল মালিক প্রতিনিধি ও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

মহাপরিচালক বলেন, বাংলাদেশে বার্ষিক ২০ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। সে হিসাবে প্রতি মাসে ১ লাখ ৩০ হাজার টনের চাহিদা। তবে রোজার মাসে তেলের চাহিদা প্রায় দ্বিগুণ হয়ে আড়াই লাখ টনে উন্নীত হয়। রিফাইনারিগুলোর বছরে ক্যাপাসিটি রয়েছে ৫০ লাখ টন। অর্থাৎ দেশে রিফাইনারির পর্যাপ্ত সক্ষমতা রয়েছে।

দেশে ভোজ্যতেলের মজুদের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে টিসিবির কাছে চার কোটি লিটার তেল রয়েছে। এখান থেকে রোজার আগে ও রোজার মধ্যে এক কোটি পরিবারকে চার লিটার করে ভর্তুকি মূল্যে দিতে পারব। অর্থাৎ টিসিবির মাধ্যমে প্রায় ৩৮ হাজার টন তেল দেয়া হবে।

এ মুহূর্তে মিলগুলোতে দুই লাখ টনের মজুদ রয়েছে। এছাড়া প্রায় ২ লাখ ৩২ হাজার টন তেল দেশে প্রবেশের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এগুলো এ মাসের মধ্যে চলে আসবে। এসব তথ্য-উপাত্ত থেকে দেখা যাচ্ছে, ভোজ্যতেলে কোনো সংকট নেই।

বৈঠকে বেশকিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেগুলো হচ্ছে—এখন থেকে ডিলারদের কাছ থেকে যতগুলো এসও দেয়া হবে সেগুলো মূল্য লিখতে হবে। এখন পর্যন্ত মিল মালিকরা ডিলারদের যতগুলো এসও দিয়েছেন সেগুলোর বিপরীতে তেল ডেলিভারি ২৪ মার্চের মধ্যে দিতে হবে। তেল দেশের বাইরে যায় কিনা এটি নিশ্চিত হওয়ার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জননিরাপত্তা বিভাগ ও বিজিপিকে চিঠি দেয়া হবে। কারণ অনেকে বলছে যে, তেল দেশের বাইরে চলে যাচ্ছে।

এছাড়া মিল গেটে ট্রাকের সিরিয়ালের জন্য ৫০ হাজার পর্যন্ত টাকা চাঁদা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। সভায় মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আজমল হোসেন বাবুল বলেন, মিল মালিকরা চাহিদামতো সয়াবিন তেল দিচ্ছেন না। তারা ঠিকভাবে তেল দিলে রমজান পর্যন্ত অস্থির বাজারকে স্থির করা যাবে।

সভায় বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন বলেন, টিকে, মেঘনা, বসুন্ধরা সবাই খোলা, প্যাকেট ও বোতলজাত তেল বিক্রি করে বাজারে। তার পরও বাজারে খোলা তেল পাওয়া যাচ্ছে না।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *