ভিসির কুশপুত্তলিকা: হাতে পিস্তল, টাকার থলে

শপুত্তলিকার ডান হাতে প্রতীকী পিস্তল এবং অন্য হাতে টাকার ব্যাগ রয়েছে। ছবি: ইউসুফ আলী

উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি)। এই আন্দোলনের মধ্যেই ফরিদ উদ্দিন আহমেদের একটি কুশপুত্তলিকা তৈরি করেছেন শিক্ষার্থীরা। বাঁশ, পাটের বস্তা ও সোলা দিয়ে বানানো কুশপুত্তলিকাটি উপাচার্যের বাসভবনের সামনে রাখা হয়েছে।

কুশপুত্তলিকার মাথার অংশে রয়েছে উপাচার্যের ছবি। তার মাথায় দৈত্যের মতো দুটি শিং রয়েছে। কুশপুত্তলিকার ডান হাতে প্রতীকী পিস্তল এবং অন্য হাতে টাকার ব্যাগ রয়েছে। এর মাঝের অংশে তিনশ’ কোটি টাকা লেখা রয়েছে। মঙ্গলবার রাতে শিক্ষার্থীরা কুশপুত্তলিকাটি তৈরি করেছেন বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি আরেকটি বড় প্ল্যাকার্ড তৈরি করেছেন শিক্ষার্থীরা। এতে লেখা রয়েছে- ‘হীরক ভিসির শেষে’। তাতে হীরক রাজার যেমন পতন হয়েছিল, তেমন ইঙ্গিত দিয়ে ছবি আঁকা রয়েছে।

হীরক রাজার মতো পতনের ইঙ্গিত দিয়ে প্ল্যাকার্ড তৈরি করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: ইউসুফ আলী

এদিকে মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত উপাচার্যের বাসার সামনে অবস্থান করেছেন শিক্ষার্থীরা। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে আবার তারা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে জড়ো হতে শুরু করেছেন।

গত সোমবার থেকে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য পদত্যাগ না করলে তারা আমরণ অনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে মঙ্গলবার রাতে এ ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মোহাইমিনুল বাশার।

মঙ্গলবার বেলা ১১টা থেকে ফের আন্দোলন শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। ছবি: ইউসুফ আলী

সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার পরও মেসভাড়ায় কোনো ছাড় না দেওয়াসহ একাধিক ‘অন্যায্য’ সিদ্ধান্তে অনেক দিন ধরে তারা ক্ষুব্ধ ছিলেন। হলের ছাত্রীদের বিক্ষোভ শুরুর পর সেই ক্ষোভ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরও জোরালোভাবে ছড়িয়ে পড়ে।

এ আন্দোলনের সূত্রপাত বৃহস্পতিবার। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ’ ছাত্রী। শনিবার সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ হলের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায় বলে অভিযোগ ওঠে। পরদিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *