দেশে নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় বিসিএস পরীক্ষা না নেয়ার সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। একই সঙ্গে সব পাবলিক পরীক্ষা বন্ধ রাখা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খুলতেও সুপারিশ করা হয়েছে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য ভবনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের সভাপতিত্বে এক সভায় মোট ১২টি সুপারিশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি রুখতেই এ ১২ দফা সুপারিশ। পাবলিক পরীক্ষা না নেয়া ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছাড়াও অধিদপ্তরের অন্য সুপারিশগুলোর মধ্যে রয়েছে সম্ভব হলে পরিপূর্ণ লকডাউনে যাওয়া, সেটি সম্ভব না হলে অর্থনৈতিক ভারসাম্য বজায় রেখে যেকোনো জনসমাগম বন্ধ করা; কাঁচা বাজার, গণপরিবহন, বিপণি বিতান, মসজিদ, রাজনৈতিক সমাগম, ভোট অনুষ্ঠান, ওয়াজ মাহফিল, রমজান মাসের ইফতার মাহফিল ইত্যাদি অনুষ্ঠান সীমিত করা; কভিড পজিটিভ রোগীদের আইসোলেশন জোরদার করা, যারা রোগীদের সংস্পর্শে আসবেন তাদের কঠোর কোয়ারেন্টিনে রাখা, বিদেশ থেকে যারা আসবেন তাদের ১৪ দিনের কঠোর কোয়ারেন্টিনের ব্যবস্থা করা এবং এ ব্যাপারে সামরিক বাহিনীর সহায়তা নেয়া, ঈদের ছুটি কমিয়ে আনা, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে প্রয়োজনে আইন জোরদার করা, দেশের প্রবেশপথে জনবল বাড়ানো, মনিটরিং জোরদার, সব ধরনের সভা ভার্চুয়ালভাবে করা এবং পর্যটন এলাকায় চলাচল সীমিত করা।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন গতকাল সন্ধ্যায় বণিক বার্তাকে বলেন, ‘করোনা বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা সভায় বসে এ সুপারিশগুলো ঠিক করেন। গতকালই (মঙ্গলবার) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে মেইল করে সুপারিশগুলো পাঠানো হয়েছে। আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) চিঠি আকারে পাঠানো হতে পারে।’
উল্লেখ্য, দেশে বর্তমানে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েছে। গত অক্টোবর ও নভেম্বরে করোনার সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে রোগী শনাক্তের হার ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে থাকে। গত বছরের ডিসেম্বর সংক্রমণের হার কমতে কমলেও গত তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বমুখী। তিন মাসের মধ্যে গতকাল শনাক্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ ছিল। গত রোববার রাজধানীর একটি অনুষ্ঠানে চলমান করোনা পরিস্থিতির কিছুটা অবনতি হওয়ায় আবারো কঠোর স্বাস্থ্যবিধির নির্দেশনা দিতে যাচ্ছে সরকার বলে জানিয়েছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।