বাগদাদে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে দুই বিক্ষোভকারী নিহত

ইরাকের রাজধানী বাগদাদে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গতকাল সকালে দুই বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন। দুজনেই টিয়ার গ্যাসের ক্যানিস্টারে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে দেশটিতে সরকারের দুর্নীতি ও অদক্ষতাবিরোধী বিক্ষোভ ফের তীব্র হবে বলে মনে করা হচ্ছে। খবর এএফপি।

বাগদাদে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরু হয় গত অক্টোবরের দিকে। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় তা স্তিমিত হয়ে আসে। কিন্তু গত রোববার আন্দোলনকারীরা রাজধানী ও দক্ষিণাঞ্চলের বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ শুরু করে। বাগদাদের তাহরির স্কয়ারে কয়েক ডজন বিক্ষোভকারী জমায়েত হলে পুলিশ ও অন্য নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ অবস্থায় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়। টিয়ার গ্যাসের ক্যানিস্টারে মাথায় ও ঘাড়ে আঘাত পেয়ে গতকাল সকালে মারা যান দুজন। পরে বিক্ষোভকারীরা তাদের মরদেহ তাহরির স্কয়ারে নিয়ে আসে।

মূলত মুস্তফা আল-কাজেমি ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথম বিক্ষোভসংক্রান্ত সহিংসতায় কারো মৃত্যু হলো। মে মাসে ক্ষমতায় আসার পরই কাজেমি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আলোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বলা হয়, তাহরির স্কয়ারের এ ঘটনা একেবারেই অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুর্ভাগ্যজনক। কারণ সরকারের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রয়োজন না হলে কোনো ধরনের সহিংস পদক্ষেপ নিতে নিষেধ করা হয়েছিল। এ অবস্থায় রোববারের দুঃখজনক ঘটনার তদন্ত করা হবে। একই সঙ্গে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনা হবে।

এদিকে অনলাইন অ্যাক্টিভিস্টরা এরই মধ্যে কাজেমিকে তার পূর্বসূরি আদেল মাহদির সঙ্গে তুলনা করছে। মাহদি গত বছর কয়েক মাস ধরে বিক্ষোভজনিত সহিংসতার পর পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। ওই সহিংসতায় সাড়ে পাঁচ শতাধিক মানুষ নিহত হয়। আহত হয় আরো অন্তত ৩০ হাজার। এ হতাহতের মূলে ছিল সামরিক মানের টিয়ার গ্যাস ক্যানিস্টার। এসব ক্যানিস্টার সরাসরি নিক্ষেপ করা হলে এবং মাথায় আঘাত হানলে মৃত্যু হতে পারে। তবে মাহদির সময়ে কত মানুষ মারা গিয়েছিল তার কোনো পরিসংখ্যান ছিল না। পরে কাজেমি হতাহতদের একটি তালিকা প্রস্তুতের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে তিনি সুষ্ঠু তদন্ত ও আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে আলোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু সোমবার বিক্ষোভকারীদের দেখে মনে হচ্ছিল, তারা বর্তমান ও পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে তেমন কোনো পার্থক্য দেখছে না।

এদিকে জাতিসংঘ এ সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, ইরাকিরা বর্তমানে বেশ কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় তাদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শনের সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে।

0Shares

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *